কর সংক্রান্ত ডিজিটাল সেবা প্রচারের উদ্যোগ

515

ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক বিভাগের সব ধরনের সেবা করদাতাদের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন ধরনের অনলাইন সেবা ও ডিজিটাল উদ্ভাবনী পদ্ধতি চালু করেছে। ফলে এখন ঘরে বসেই মিলছে কর সংক্রান্ত সেবা।
রাজস্ব প্রশাসন এসব সেবা সব পর্যায়ের করদাতা ও জনসাধারণের কাছে তুলে ধরতে ব্যাপকভিত্তিক প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। যাতে অনলাইন সেবার সঙ্গে জনগণ পরিচিত হতে পারেন।
এর অংশ হিসেবে কর সংক্রান্ত ডিজিটাল সেবা নিয়ে দৈনিক পত্রিকা ও টেলিভিশনে নিয়মিত বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কর কর্মকর্তারা বিভিন্ন কর অঞ্চলে করদাতাদের ডিজিটাল সেবা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করছেন।এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনলাইনভিত্তিক সেবার সুবিধাদি তুলে ধরে করদাতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।
এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বুধবার বাসসকে বলেন, ‘করদাতাকে আরো সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী খরচে সেবা প্রদানের জন্য নানা ধরনের ডিজিটাল উদ্ভাবনী পদ্ধতি এবং অনলাইন সেবা চালু করা হয়েছে। এর ফলে দেশের জনগণ, করদাতা ও কর কর্মকর্তা জরুরি কার্যক্রম নি:খরচায় দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে পারছেন। আমরা এসব সেবাকে বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি।যাতে জনগণ ডিজিটাল সেবার সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন।’
তিনি বলেন, এখন করদাতারা ঘরে বসেই অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের পাশাপাশি আয়কর পরিশোধের সুবিধা পাচ্ছেন। যারা ভাবছেন,কত টাকা আয়কর দিতে হবে এই ভাবনার অবসান ঘটিয়ে করযোগ্য আয়-ব্যয়ের হিসাব করে দিচ্ছে মোবাইল অ্যাপসের ট্যাক্স ক্যালকুলেটর।আপনার মুঠোফোনই জানাবে আপনি কত টাকা আয়কর দেবেন।ই-পেমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে যে কেউ অনলাইনে কর প্রদান করতে পারছেন।
তিনি জানান, প্রচার মাধ্যমে এসব ডিজিটাল সেবা নিয়ে নিয়মিত বিজ্ঞাপন যাচ্ছে।এর বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে করদাতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সভা-সেমিনার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় কর কমিশনাদের অটোমেশনের আওতায় সব ধরনের সেবাকে করদাতাদের মাঝে প্রচার করতে বলা হয়েছে। যাতে করদাতারা এসব সেবা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হন।’
তিনি বলেন, সরকারের একক বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণ এনবিআরের কার্যক্রমের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই আরো সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী খরচে সেবা প্রদানের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনী পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু করেছি।এতে করদাতারা মোবাইল অ্যাপ অথবা ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সহজে রিটার্ন জমা থেকে শুরু করে আয়কর,শুল্ক ও ভ্যাট জমা দিতে পারছেন। পাশাপাশি কর সংক্রান্ত সকল তথ্যাদি দ্রুত পেয়ে যাচ্ছেন।
অনলাইনভিত্তিক কর সেবা করদাতাদের কাছে তুলে ধরতে পারলে তারা এই সেবা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য,আয়করের পাশাপাশি ভ্যাট কার্যক্রম পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আনার লক্ষ্যে ‘ভ্যাট অনলাইন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাটের ফরম পূরণ ও জমাদান, নির্ধারিত ভ্যাট পরিশোধ, প্রতি মাসে ভ্যাট রিটার্ন বা দাখিলপত্র (মূসক-১৯) জমা দেয়া যাচ্ছে অনলাইনে। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ট্রেজারি চালান ও ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাট দিতে পারছেন ব্যবহারকারীরা। এছাড়া ই-কাস্টমস সেবায় অনলাইন ম্যানিফেস্টো, অনলাইন বিল অব এন্ট্র্রি ও অনলাইন শুল্ক পরিশোধের সুবিধা পাচ্ছে করদাতারা।