বাজিস-২ : রাণীনগরে আম বাগানের মধ্যে ডাটা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুল হান্নান

384

বাজিস-২
নওগাঁ-ডাটা চাষ
রাণীনগরে আম বাগানের মধ্যে ডাটা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুল হান্নান
নওগাঁ, ৩১ মে, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় রাণীনগর উপজেলায় আম বাগানে ডাটা চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এনেছেন আব্দুল হান্নান নামের এক বর্গাচাষী। তিনি এলাকায় ইতোমধ্যে অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সবজি জাতীয় ফসল চাষে সফলতা পেয়েছেন। তিনি একই জমিতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি নানান জাতের ফসল চাষ করে এ পরিচিতি লাভ করেছেন।
তার কাছ স্থানীয় অন্যান্য চাষিরা নানান ধরণের পরামর্শ নিয়ে এলাকার অনেকেই একই জমিতে অধিক ফসল ফলানোর লক্ষ্যে রকমারি সবজিসহ ফলজ জাতীয় বৃক্ষ চাষ করে লাভবান হতে শুরু করেছেন। উক্ত কৃষক আব্দুল হান্নানের পৈত্রিক তেমন কোন জমি নেই। অন্যের জমি লিজ নিয়ে একই জমিতে হরেক রকম সবজি যেমন, ডাটা শাক, পালং শাক, খিরা, শশাসহ আম ও ডাব জাতীয় ফলদ গাছ লাভবান হওয়ার ঘটনা এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
নিজেই পরিশ্রম করে এই ফসলগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা করে থাকেন। চলতি রবি মৌসুমে আড়াই বিঘা জমির উপর অবস্থিত আমবাগানে আমগাছের ফাঁকে ফাঁকে ডাটা শাক থেকেই সব খরচ বাদে তিনি প্রায় ৬০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। ইতোমধ্যেই তার দেখা-দেখি একই জমিতে রকমারি চাষ শুরু হয়েছে। এ জমিতে অবস্থিত ৩৫টি আমগাছ থেকে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সুস্বাদু পাকা আম বিক্রয়ের জন্য বাজারে আনা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের কুজাইল গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হান্নান (৩৮) প্রাথমিক স্কুল পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। পিতা-মাতার সংসারে একটু স্বচ্ছলতা আনার লক্ষ্যে অল্প বয়সেই সংসার পরিচালনার দায়ভার কিছুটা তার কাঁধে আসে। অল্প পরিশ্রমে কিভাবে বেশি উপার্জন করা যায় ঠিক সেই পরিকল্পনা সামনে রেখে অন্যান্য কাজকর্মের পাশাপাশি সবজি চাষের দিকে মনোযোগী হয়ে উঠেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি প্রতিটা সবজি চাষে সফলতা পেলে এর পরিধি বাড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সে অন্যের জমি স্বল্প টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে রকমারি চাষ শুরু করে।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে দূর্গাপুর গ্রামের মৃত রহিসুল আলম খানের চক-কুজাইল মৌজার রতনডারি সংলগ্ন প্রায় আড়াই বিঘা জমি ১০ বছরের জন্য লিজ নেয়। শুরুতেই তিনি ওই জমিতে গম চাষ করেন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আম গাছ, ডাব গাছ লাগান। আমগাছগগুলো ইতোমধ্যে বড় হয়ে উঠেছে। এখন ঐ বাগানে আমগাছের ফাঁকে ফাঁকে ডাটা শাক, পালং শাক, ব্যাংগি, ঢেড়সসহ রকমারি জাতের নানান সবজি চাষ করেছেন। এতে বর্তমানে তিনি সফলতা অর্জন করেছেন। তার সফলতা দেখে আশপাশের চাষিরাও তাদের জমিতে রকমারি জাতের সবজি ও ফলজ বৃক্ষ চাষে মনোযোগী হচ্ছে। ফসলী জমিতে বসত বাড়ি নিমার্ণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত কাজ করার কারণে দিনদিন যখন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে ঠিক সেই সময় এক জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসল ফলায়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে মাঠ পর্যায়ের কৃষক আব্দুল হান্নান।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারওয়ার বলেছেন, তিনি আব্দুল হান্নানের মিশ্র বাগানটি পরিদর্শন করেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি অনেক ভাল করেছেন। একই জমিতে নানান জাতের সবজি চাষ করে তিনি এখন লাভবান হচ্ছেন। ইতোমধ্যেই রাণীনগর কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে নানা ধরণের দিকনিদের্শনামূলক পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। আগামীতে আব্দুল হান্নান এ ক্ষেত্রে আরো ভাল করবে বলে কৃষি বিভাগের প্রত্যাশা।
বাসস/সংবাদদাতা/আহো/১০২০/নূসী