শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে কারখানা বন্ধ : বিজিএমইএ

419

ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : আগামীকাল থেকে শ্রমিকরা কাজ না করলে কোন মজুরি পাবে না এবং শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা অনুযায়ী কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
রোববার পোশাক শিল্পখাতের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে ফিরে যান, উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ করুন। আর যদি আগামীকাল থেকে আপনারা কারখানায় কাজ না করেন, তাহলে আপনাদের কোনো মজুরি প্রদান করা হবে না (নো ওয়ার্ক নো পে)। একইসঙ্গে শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা মোতাবেক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হবে।’
পরে বিজিএমইএ’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও কাল থেকে কাজে না ফিরলে কারখানা বন্ধ এবং মজুরি না দেয়ার কথা জানানো হয়।
মজুরি কাঠামো পরিবর্তনের দাবিতে গত কয়েকদিন যাবৎ কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পোশাক শ্রমিকরা। এর প্রেক্ষিতে আজ বিজিএমইএ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পোশাক মালিকরা। এতে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, জাতীয় সংসদ সদস্য ও বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী, সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। সমস্যা সমাধানে সরকার গঠিত ত্রি-পক্ষীয় কমিটি কাজ করছে। কমিটি মজুরি কাঠামোর কোথাও ব্যতয় হলে তার পুনর্বিবেচনা করবে। তার জন্য আন্দোলন, ভাংচুর করার প্রয়োজন নেই। তিনি অভিযোগ করেন শ্রমিকদের সরলতার সুযোগ নিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের ব্যবহার করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়।
শ্রমিকদের উদ্দেশ্য বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আপনাদের সরলতার সুযোগে দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও প্রধান কর্মসংস্থানের খাত নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলবে, তা হতে দিবেন না। এ খাতটি ধ্বংস হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনারা। আপনারা কর্মহীন হবেন। আপনাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হতে পারে, এমন কোন খাত এখনও গড়ে উঠেনি।’
তিনি জানান, সরকার গঠিত ত্রি-পক্ষীয় কমিটিতে গত ৮ জানুয়ারি সিদ্ধান্ত হয়, ইতিমধ্যে ঘোষিত নূন্যতম মজুরি গেজেটের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডে যদি মূল মজুরি সমন্বয়ের প্রয়োজন থাকে, তা বিবেচনা করে সুপারিশ করা হবে। এছাড়া বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট সমন্বয়ের পর কোন শ্রমিকের মূল বা মোট মজুরি কম হবে না মর্মে সবাই একমত পোষন করে এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদেরকে কাজে যোগদানের আহবান জানায়। কিন্তু তাদের আহবানকে অগ্রাহ্য করে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করেনি। তারা কারখানা ভাংচুর করছে, গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করছে, জনজীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতন দেয়া হচ্ছে। কিছু ব্যতয় হলে সেখানেও পরিশোধ করে দেয়া হবে। তবে আমরা দেখেছি যেখানে নতুন কাঠামোতে বেতন দেয়া হয়েছে সেসব কারখানায় বেশি ভাঙচুর করা হয়েছে।