বাসস ক্রীড়া-৩ : রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ প্রিভিউ: বি’

261

বাসস ক্রীড়া-৩
ফুটবল-বিশ্বকাপ- প্রিভিউ
রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ প্রিভিউ: বি’
গ্রুপ বি : পর্তুগাল, স্পেন, মরক্কো ও ইরান
ঢাকা, ৩০ মে ২০১৮ (বাসস): রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকী। এরই মধ্যে ফুটবল ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে আসর শুরুর গ্রুপ পর্ব। কোন দল কোন গ্রুপে পড়েছে এবং কোন গ্রুপ থেকে কোন দলটি নক আউট পর্বে উঠে আসবে ইত্যাদি নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের দল এবং ম্যাচ পর্যালোচনা।
পর্তুগাল: নিজেদের দক্ষতা এবং খ্যতিমান খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত পর্তুগাল দীর্ঘ সময় ধরেই ভয়ঙ্কর দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছে। যে কোন বড় টুর্নামেন্টে তারা বাজির ঘোড়া হয়ে উঠতে পারে। অর্জন করতে পারে সামর্থ্যরে চেয়ে বেশী। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরেই দলটির আলোচিত খেলোয়াড়ের আসন দখল করে আছেন রিয়াল মাদ্রিদ সুপার স্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ৩৩ বছরে পৌঁছে যাওয়া এই ফুটবল সুপার স্টারের জন্য এটিই হতে পারে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ।
দুই বছর আগে ইউরোতে যে পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেছে এখন এর চেয়ে বেশী দূরে চলে গেছে পর্তুগাল। অপেক্ষা কৃত খর্ব শক্তির দলটি গ্রুপ পর্বে স্পেনের পেছনে থেকে অর্জন করতে পারে দ্বিতীয় স্থান।
স্পেন: ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সব বড় আসরে বিজয়ী স্পেন ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তবে এখন কোচ জুলেন লোপেতেগুইয়ের অধীনে দলটি আবার পুর্ন ফর্ম ফিরে পেয়েছে। এখন আরো একবার বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলতে চায় ২০১০ আসর জয়ী স্পেন।
লা রোজাদের এই মুহুর্তে কিছুটা দূর্বলতা হচ্ছে আক্রমনভাগে। বিগত বছর গুলোতে দলের আক্রমনভাগে কোন স্ট্রাইকারই স্থায়ী আসন গাড়তে পারেনি। তবে এমন নয় যে দলটি একেবারেই খারাপ অবস্থানে। তরুন তারকা মার্কো এসেনসিও সেখানে দারুন দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেন। সেই সঙ্গে সেখানে ভুমিকা রাখতে পারেন ভ্যালেন্সিয়া তারকা রড্রিগো এবং সালভাটর সিলাচি।
দলের বাকী সদস্যদের নাম যে কোন দলের জন্য ভীতিকর। এদের মধ্যে আছেন ডেভিড ডি গেয়া, যিনি বিশ্বের সেরা গোল রক্ষকদের মধ্যে অন্যতম। আর মধ্যভাগে যারা আছেন তাদের মধ্যে কাকে রেখে কাকে সেরা বলা যাবে সেটি নিয়ে ভাবতে হবে দীর্ঘক্ষন।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সম্প্রতিক প্রীতি ম্যাচে স্পেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে এবং ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকে। এই তথ্যগুলোই দলটির সামর্থ্য প্রমানের জন্য যথেষ্ঠ। গ্রুপ পর্ব বিষয়ে এই দলটি সম্পর্কে আলোচনা না করাই শ্রেয়। গ্রুপের শীর্ষে থেকেই দলটি দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে ধারনা করা হচ্ছে।

মরক্কো: আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাই পর্বে সি’ গ্রুপের সেরা দল হিসেবে বিশ্বকাপের চুড়ান্ত আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মরক্কো। গ্রুপের ডাকসাইটে দল আইভরি কোস্ট, গ্যাবন ও মালিকে পেছনে ফেলেই প্রথম স্থান অর্জণ করেছে তারা। ১৯৯৮ সালের পর প্রথম বিশ্বকাপের চুড়ান্ত পর্বে ওঠার পথে বাছাইপর্বের কোন ম্যাচেই পরাজিত হয়নি মরক্কো।
মেধি বেনাটিয়া, ইউনিস বেলহান্দা ও হেকিম জিয়েচের মত মেধাবী তারকা নিয়ে মহাদেশীয় আসরে ভাল ফলাফল করলেও বিশ্ব আসরের জন্য যথেষ্ঠ শক্তিশালী নয় সাহারা মরুভুমির প্রান্তে অবস্থিত দেশটি। স্পেন বা পর্তুগালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবেনা এই আফ্রিকান দেশের।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে মরক্কো যদি ইরানের বিপক্ষে জয় লাভ করে এবং পর্তুগাল স্পেনের কাছে হেরে যায়, তাহলে এটলাস লায়নও ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নদের মধ্যকার ম্যাচ হয়ে উঠতে পারে দারুন আকর্ষনীয়। তবে গ্রুপ পর্বে তারা তৃতীয় স্থানে থাকবে বলে অনুমান করা যাচ্ছে।
ইরান: এশিয়া থেকে সবার আগে বিশ্বকাপে অংশগ্রহন নিশ্চিত করেছে ইরান। গত জুনে উজবেকিস্তানকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট লাভ করে বছাইপর্বের ১৮টি ম্যাচে অপরাজিত থাকা ইরান। এই নিয়ে পঞ্চমবারের মত বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছে ইরান। কোচ কার্লোস কুইরোজ এবারের আসরে দলকে নকআউট পর্বে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য স্থির করেছেন।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে কোনভাবেই নকআউট পর্বে খেলার সুযোগ নেই ইরানের। স্পেন বা পর্তুগালের মত গ্রুপ প্রতিপক্ষকে টপকে এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবার নয়। আফ্রিকান প্রতিপক্ষ মরক্কোও সম্ভাবনার দিক থেকে তাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রুপের তলানীতেই থাকতে হতে পারে ইরানকে।
বাসস/এমএইচসি/১৪১০/স্বব