মেহেরপুরে লাভজনক হওয়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে নেপিয়ার ঘাসের চাষ

399

মেহেরপুর, ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নেপিয়ার ঘাসের। গবাদি পশু পালনের প্রধান খাদ্য হিসেবে এ ঘাসের চাহিদা এখন জেলা জুড়ে। আর নেপিয়ার চাষ করে অনেক পরিবারেই চলছে জীবিকা নির্বাহ।
মেহেরপুর জেলার গবাদি পশু পালনকারীদের কাছে হাইব্রিড জাতের নেপিয়ার ঘাস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় জেলার অনেক চাষি বাণিজ্যিকভাবে এ ঘাসের চাষ করছে। অনেকেই পতিত জমিতে এবং মধ্যবর্তী ফসলের মাঝে নেপিয়ার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। আর এ নেপিয়ার চাষের কারণে গবাদি পশুর খাদ্য চাহিদা যেমন মিটছে পাশাপাশি অনেক পরিবারই জীবিকা নির্বাহ করছে এ ঘাস চাষ করে। জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের হিসেবে এ বছর জেলায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে নেপিয়ার ঘাসের চাষ হয়েছে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের ঘাসচাষি রায়হানুল হক বলেন এক বিঘা জমিতে বছরে নেপিয়ার ঘাষ চাষ করতে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। খরচ বাদে ৬০-৭০ টাজার টাকা লাভ হয়।
নেপিয়ার একটি হাইব্রিড, দ্রুত বর্ধনশীল এবং উচ্চ উৎপাদন সম্পন্ন স্থায়ী ঘাস। এ ঘাসকে একটি অতি উৎকৃষ্ট ঘাস বললেও ভুল হবে না। এটি গবাদিপশুর জন্য একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ঘাস। সাধারণ ঘাসে যেখানে মাত্র ৮-১২% ক্রুড প্রোটিন থাকে সেখানে নেপিয়ার ঘাসে ১৬-১৮% ক্রুড প্রোটিন পাওয়া যায়। নেপিয়ার উচ্চ ফলনশীল ঘাস, যা বছরে ৬-৮ বার কাটা যায় এবং একবার রোপণ করলে ৬-৮ বছর ফলন পাওয়া যায়। প্রতি একর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে বছরে ১৮০-২০০ মেঃ টন সবুজ ঘাস পাওয়া যায় অর্থাৎ এক একর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে অনায়াসে ২০-২২ টি গাভীর একটি খামারের সারা বছরের কাঁচা ঘাসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ক্রেতারা জানান, এ ঘাস গরুকে খাওয়ালে ভাল দুধ হয় এবং শরীরও হৃষ্টপুষ্ট হয়।
নেপিয়ার ঘাসের চাষ পদ্ধতিঃ
জেলা খামার বাড়ির উপ-পরিচালক ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান- নেপিয়ার ঘাসের পাতা চওড়া, মসৃণ ও সবুজ এবং কান্ড লম্বা, রসালো ও মোটা, গবাদিপশুর জন্য খুবই আকর্ষণীয় ও সুস্বাদু এবং উচ্চ ক্রুড প্রোটিন সমৃদ্ধ। নেপিয়ার ঘাসের পুষ্টিমান ও উৎপাদন দক্ষতা অন্যান্য জাতের ঘাসের তুলনায় অধিক এবং শীতকালেও উৎপাদনের ধারাবাহিকতার কারণে উঁচু জমিতে এ ঘাস চাষ করে সারা বছরই গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
সদর উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ তৌহিদুল ইসলাম জানান, জেলায় এ ঘাসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রাণি সম্পদ অফিস প্রতিবছর উন্নত জাতের ঘাস চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধের পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।