ছয় মাসে আসবাবপত্র রফতানি বেড়েছে ৪০ শতাংশ

318

ঢাকা, ৫ জানুয়ারি, ২০১৯ (বাসস) : দেশের বাইরে ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশে তৈরি আসবাবপত্র বা গৃহস্থালী পণ্য। গত এক দশক ধরে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এর রফতানি আয়। ফলে বিশ্ববাজারে ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশের আসবাবপত্র। এর ধারাবাহিকতায় চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৩ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলারের আসবাবপত্র রফতানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে ২ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের আসবাবপত্র রফতানি হয়। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে রফতানি আয়ের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। সেই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার পুরোটাই অর্জিত হয়েছে।
দেশের আসবাবপত্রশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের দাবি-গুণগতমান এবং যুগোপযোগী নকশায় আসবাবপত্র তৈরি হওয়ায় বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের আসবাবপত্র প্রিয় হয়ে উঠছে।তাই নতুনত্ব আর আধুনিকতায় গত এক দশকে অনেক দূর এগিয়েছে বাংলাদেশের আসবাবপত্র শিল্প।
বর্তমানে আরব বিশ্ব বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে মূলত বাংলাদেশে তৈরি আসবাবপত্র রফতানি হচ্ছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, রাশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে রফতানি শুরু হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, বিগত অর্থবছরে আসবাবপত্র রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে রফতানি আয় ছিল ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলারের। সুতরাং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২১ লাখ ডলারের বেশি রফতানি আয় এসেছে।
বাংলাদেশ আসবাবপত্র রফতানিকারক সমিতির সভাপতি কে এম আক্তরাজ্জামান বাসসকে বলেন, নিত্যনতুন নকশা, মানসম্মত কাঠ আর কারিগরদের দক্ষতায় তৈরি করা বাংলাদেশের আসবাবপত্রের মান খুব ভালো। ফলে প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক বাজারে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের বিপুল চাহিদা মেটাতেও সক্ষম হচ্ছে।
ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য গুণগতমান উন্নয়ন এবং ডিজাইনে প্রতিনিয়ত নতুনত্ব আনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি মনে করেন, আসবাবপত্র রফতানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি সার্বিক রফতানির ক্ষেত্রে আশার আলো জাগাচ্ছে। রফতানিকারক শীর্ষ দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এসব কারণে আসবাবপত্র তৈরির নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে।
এই ব্যবসায়ী নেতা আসবাবপত্র শিল্পকে আরো এগিয়ে নিতে কিছু প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহার কমানোর দাবি করেন।
এ বিষয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুারোর (ইপিবি) মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী বাসসকে বলেন, দেশের আসবাবপত্র শিল্পকে স্থায়ী রফতানি পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আসবাবপত্র রফতানিতে দেওয়া হচ্ছে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা। নতুন বাজার সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য তৈরিতে সরকার ব্যবসায়ীদের সহায়তা করছে। এসব কারণে আসবাবপত্র রফতানি আয় আশার আলো জাগাচ্ছে।
তিনি জানান, গত এক দশক ধরে বাংলাদেশের আসবাবপত্রের রফতানি আয় ক্রমান্বয়ে বেড়েছে এবং প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হচ্ছে।