সহিংসতা-নাশকতা কঠোর হাতে মোকাবেলার নির্দেশ সিইসির

588

ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো ধরণের সহিংসতা বা নাশকতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা কঠোর হাতে মোকাবেলা করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
ভোট গ্রহণের আগেরদিন শনিবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি তুলে ধরে ভোটার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এসব নির্দেশনা দেন তিনি।
সিইসি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, অনেক প্রার্থীর এজেন্টকে হয়রানি করা হচ্ছে। কিন্তু এজেন্টদের হয়রানি কাম্য নয়। ফৌজদারী অভিযোগ না থাকলে পুলিশ কাউকে হয়রানি করবে না। পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে। কারণ, এজেন্টরা প্রার্থীর প্রতিনিধি। তারা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে।
তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যেন ন্যায় অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, নির্বাচনী আচরণ বিধি যেন না লঙ্ঘন না হয় এবং প্রতিযোগিতা যেন সহিংসতায় পরিণত না হয়। তবু নির্বাচনে সহিংসতা হয়েছে, জানমালের ক্ষতি হয়েছে, এগুলো কাম্য ছিল না। নিরপেক্ষ তদন্ত করে সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।
ভোটার, প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে কেএম নূরুল হুদা বলেন, আপনারা আচরণবিধি মেনে চলুন, সহিংসতা পরিহার করুন। প্রতিযোগিতামূলক পরিবশে বজায় রাখতে সহায়তা করুন। প্রলোভন, প্রভাবের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে সিইসি বলেন, সহিংসতা বা নাশকতা মূলতক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কঠোর হাতে মোকাবেলার নির্দেশ দিচ্ছি। অবশ্যই বাহিনী তা নিয়ন্ত্রণ করবে। নিস্ক্রিয় ভূমিকার কারণে সহিংসতা হলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। দেশবাসীকে সর্বশেষ প্রস্তুতি অবহিত করার উদ্দেশ্যে এসেছি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী মাঠে রয়েছে। সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তারা প্রচার কাজে মুখরিত হয়েছেন। মিছিল, জনসভা, লংমার্চ, লিফলেট, পোস্টার, ঘরে ঘরে গমনের মধ্যে দিয়ে প্রতিযোগিতামূলক আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে। উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
এবারে ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটার ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৬ হাজার ৭৬৭টি ভোটকক্ষে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। ইতিমধ্যে সমগ্র নির্বাচনী উপকরণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। রাতের মধ্যে উপকরণ প্রতি কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। ইভিএমের কেন্দ্রেও সামগ্রী পৌঁছে গেছে।
ভোট কেন্দ্র, সামগ্রী, এজেন্টদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটরা কর্মরত আছেন। কেন্দ্রের অবস্থান সবার উপরে। কেন না, কেন্দ্রের সাফল্যের ওপর ভর করে গোটা নির্বাচনের সাফল্য নির্ভর করে।
তিনি বলেন, কর্মকর্তা, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। রিটার্নিং অফিসার ৭টার মধ্যে পরিচালনার কাজ শুরু করবেন। তিনি ব্যালট বাক্স খুলে সকলের উপস্থিতিতে সকলকে ব্যালট বাক্স খালি কিনা দেখাবেন। এরপর ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু করবেন। ভোটগ্রহণ শেষ হলে এজেন্ট, সাংবাদিকদের সামনে ভোট গণনার কাজ শুরু করবেন। কেন্দ্রের বাইরে করা যাবে না। ফলাফলের তালিকা এজেন্টদের সরবরাহ করতে হবে। কেউ অবৈধভাবে ভোটকক্ষ ত্যাগ করতে বললে ম্যাজিস্ট্রেট বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিতে হবে।
গণমাধ্যমেরে উদ্দেশে তিনি বলেন, ভোট গ্রহণের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনারা আপানাদের পবিত্র দায়িত্ব পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।