বৈদেশিক বাণিজ্যের ঝুঁকি ও খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব

599

ঢাকা, ২৮ মে, ২০১৮ (বাসস) : বৈদেশিক বাণিজ্যের ঝুঁকি ও খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা ব্যাংকিং খাতের সংগঠন মিলে ক্রেডিট রিপোর্টের জন্য তথ্য ভান্ডার সৃষ্টি করা যেতে পারে। এতে কোন দুর্বল এবং ভুয়া ক্রেডিট রিপোর্ট সরবরাহের সুযোগ থাকবে না। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে। অনিয়ম এবং জালিয়াতির ঘটনাও কমে আসবে।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে একথা বলা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘প্র্যাকটিসেস অব অবটেইনিং ক্রেডিট রিপোর্ট অব ফরেন কাউন্টার পার্টস ইন ট্রেড সার্ভিসেস-ইজ ইট ওয়াকিং?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রিয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান প্রধান অতিথি ছিলেন।
গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব। ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ গবেষণা সম্পন্ন করেন।
বৈঠকে রাজী হাসান তার বক্তব্যে বলেন, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে দক্ষতার পরিচয় দিতে না পারলে ব্যাংক এবং রাষ্ট্রীয় ঝুঁকি দুটোই বাড়বে।
তিনি বলেন, অর্থ পাচার ঠোকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। শেল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কোন লেনদেন যাতে না হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করে আহসান হাবীব বলেন, সম্প্রতি একটি রফতানি আদেশের বিপরীতে ২৬টি প্রতিষ্ঠান পণ্য রফতানি করার পরও পেমেন্টে পায়নি। আমদানিকারককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৬০০ কোটি টাকা অনিয়মের ঘটনা পরবর্তীতে সবার নজরে আসে। ক্রেডিট রিপোর্ট অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এ ধরণের ঘটনা ঘটত না।
তিনি বলেন, ক্রেডিট রিপোর্ট হল বিদেশী আমদানিকারক বা রফতানিকারকের বিষয়ে বিশদ বিবরণ। এর পেছনে প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি ডলার অর্থ ব্যয় হয়, যা অযৌক্তিক নয়। কিন্তু ক্রেডিট রিপোর্ট একদিকে যথাযথভাবে হয় না, অন্যদিকে গদবাঁধা হলেও এসব ক্রেডিট রিপোর্ট কোন ধরণের বিশ্লেষণ করা হয় না। ফলে অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান জাল-জালিয়াতির সুযোগ পায়।
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য ব্যাংকারদের সর্তক থাকতে হবে। ব্যাংকাররা সর্তক থাকলে কোন অনিয়মের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই।
বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধূরী বলেন, ব্যাংকারদের আরও সচেতন হতে হবে। কারণ কেউ যেন ব্যাংকারদের ব্যবহার করে অবৈধ সুবিধা কিংবা টাকা পাচার করতে না পারে।
সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোরারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিআইবিএমের অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, কমার্স ব্যাংক এজির চীফ রিপ্রেজেনটেটিভ তৌফিক আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।