৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়াতে হবে

368

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও মানবসম্পদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে। একইসাথে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে ‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব : বাংলাদেশের সুযোগ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলুশন (বিডিফোরআইআর) যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাশেম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক, ডিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন,পরিচালক ইমরান আহমেদ, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের পলিসি এ্যাডভাইজর আনির চৌধুরী, বিডিফোরআইআর সহ-সভাপতি সৈয়দ তামজিদ উর রহমান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মো. শহীদুল হক বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছে। আমাদের তরুণ সমাজ ইতোমধ্যে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারের অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকোচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং তা মোকাবেলার জন্য এখনই যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে যারা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারবে, তারাই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে এবং এমতাবস্থায় আমাদেরকে অবশ্যই নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। তবে তিনি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের অর্থনীতি,ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা,পণ্য উৎপাদন ও বিপণন সামগ্রিক পেক্ষাপটে অভাবনীয় পরিবর্তন আনবে এবং বাংলাদেশকে এ বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি জানান,৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সময়কালে রোবটিকস,ক্লাউট টেকনোলোজি, ব্লকচেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং, ন্যানোটেকলোজি এবং বায়োটেকনোলোজি বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে এবং এসব প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে,আমাদের তরুণ প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রণোদনা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের পলিসি এ্যাডভাইজর আনির চৌধুরী তার প্রবন্ধে বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে একদিকে যেমন নতুন কাজের দিগন্ত উন্মোচিত হবে একইসাথে কর্মচ্যুতিরও সম্ভাবনা থাকবে। তিনি জানান,এজন্য আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমাদের দেশের কর্মক্ষম প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে পুনঃপ্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে এবং আরো ২কোটি মানুষকে নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করতে হবে।
তিনি বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নতুন উদ্ভাবিত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সৈয়দ তামজিদ উর রহমান তার বক্তব্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতানুগতিক প্রক্রিয়া পরিহার করে ক্রেতা বান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ এবং নতুন ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য শিল্পমালিকদের প্রতি আহবান জানান।