ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপানো ও টাকা ছড়ানোর জন্য বিএনপি’কে অভিযুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী

719

ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ নির্বাচনে বিজয়ী হতে ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপানো ও টাকা ছড়ানোর জন্য বিএনপি’কে অভিযুক্ত করেছেন এবং দলীয় নেতা-কর্মিসহ সকলকে ষড়যন্ত্রকারীদের (বিএনপি) সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ভোটে জেতার জন্য বিএনপি ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপাচ্ছে এবং টাকা ছড়াচ্ছে। তাই আমি আপনাদের বলতে চাই কোথায় এবং কোন কোন ছাপাখানাগুলো এ ধরনের ভুয়া ব্যালট পেপার ছাপাচ্ছে, তা খুঁজে বের করুন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকালে তাঁর বাসভবন ‘সুধাসদন’ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং পিরোজপুর জেলায় দলের নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্যদানকালে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, লন্ডন থেকে বিএনপি নেতা পরিকল্পনা করছেন, অন্যদিকে তার সহযোগিরা নির্বাচনে বিজয়ী হতে এখানে ষড়যন্ত্র করছেন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই যে, তাদের একটি খারাপ পরিকল্পনা আছে’।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এখন নিজেদের কার্যালয় ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি বলেন, তারা যাতে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে না পারে সেজন্য জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘জনগণকে এটা প্রতিরোধ করতে হবে এবং তাদের (বিএনপি) ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া যাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোট দিতে চায়। তিনি বলেন, ‘অন্যদিকে বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিতে চায়। কিন্তু সবাই যদি সতর্ক থাকে তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি ও জামায়াত জোটের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি সে সময়ে নির্বাচন ভন্ডুল এবং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আগুন সন্ত্রাসী শুরু করে। তবে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলায় তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, তারা ভোটের দিনের তিন থেকে চার দিন আগে আবারো এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে পারে। তারা যাতে এ ধরনের কর্মকান্ড করতে না পারে এ জন্য তিনি দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিএনপি-জামায়াত জোটকে প্রত্যাখ্যান এবং আওয়ামী লীগকে পুনরায় নির্বাচিত করার আহবান জানান। তিনি যারা এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ এবং ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা ও দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তাদেরকে নির্বাচনে বর্জন করারও আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশে আবার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু হবে এবং সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে। তারা নির্বাচিত হলে দেশ ধ্বংস করবে এবং দেশকে আল বদর আল শামস এর হাতে তুলে দেবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দেশে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও জঙ্গিবাদ এবং বাংলা ভাই সৃষ্টির উল্লেখ করেন। তিনি বিগত দশ বছরে দেশে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বর্তমান উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পুনরায় ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ গড়ে তুলতে হবে। ভবিষ্যতে দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির কোন ঠাই হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার গত দশ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছে। তিনি এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট প্রর্থীদের ভোট দেয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চাই। তিনিবলেন, জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে মায়ের ভাষায় কথা বলার সুযোগ ও স্বাধীনতা পেয়েছিল। এখন তারা নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দশ বছর ক্ষমতায় থাকায় দেশের প্রতিটি গ্রামে উন্নয়নের ছোয়া লেগেছে। আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসলে একটি লোকও গৃগহীন থাকবে না। শেখ হাসিনা কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়াও পিরোজপুরে ব্যাপক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তার সরকার ঢাকা চট্টগাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করেছে এবং বন্দর নগরী থেকে কক্সবাজার হয়ে গুন্ধম পর্যন্ত সড়কে বাকি কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা পুনরায় ক্ষমতায় আসলে ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে বুলেট ট্রেন চালু করব।
শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমাবেশে জনগণের কাছে চার জেলার আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।