তিন ফরম্যাটেই অভিষিক্ত সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম

213

সিলেট, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ (বাসস) : আজ শুক্রবার বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তৃতীয় খেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশে^র ২০০তম ওয়ানডে ভেন্যু হিসেবে অভিষেক হল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেয়িামের। ফলে সবুজ চা বাগান আর টিলাবেষ্টিত নয়নাভিরাম এই স্টেডিয়ামটির আর কোন অপূর্ণতা রইলো না।
এর আগে গত ৩-৭ নভেম্বর জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ দিয়ে বিশে^র ১১৬তম ও বাংলাদেশের ৮ম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অভিষিক্ত হয় এই স্টেডিয়াম। ২০১৪ সালে টি-২০ বিশ^কাপের বাছাই পর্ব দিয়ে স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করলেও চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় দল এই মাঠে অভিষেক ম্যাচ খেলে শ্রীলংকার বিপক্ষে।
বাকি ছিল ওয়ানডে। সেটিও আজ পূর্ণতা পেলো। একই বছরে ক্রিকেটের সবক’টি ফরম্যাটে অভিষিক্ত হলো সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এই নিয়ে উচ্ছ্বসিত সিলেটের ক্রিকেটভক্ত, পৃষ্ঠপোষকরা।
তাদের মতে শহরতলীর লাক্কাতুরায় অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটির প্রকৃতি ও পরিবেশ যেমন যেমন সুন্দর, তেমনি সুযোগ সুবিধাও অনেক বেশি। এটি দেশের সেরা স্টেডিয়াম হওয়ার দাবি রাখে। তাই, এখানে নিয়মিত ক্রিকেট আয়োজন সময়ের দাবি।
ক্রীড়া লেখক সমিতির সিলেটের সভাপতি মান্না চৌধুরী বাসসকে বলেন, সিলেট স্টেডিয়ামটি দেশের তৃতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হওয়ার কথা ছিল। দেরিতে হলেও এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে এবং সবক’টি ফরম্যাটে খেলা আয়োজন হওয়ায় আমরা খুশি।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়াম এটি। বিমানবন্দর সড়কের পাশে অবস্থিত, যোগাযোগ, হসপিটালিটি ফেসিলিটিজ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও দর্শকপ্রিয়তা সবকিছু বিবেচনায় এই স্টেডিয়ামে নিয়মিত খেলা আয়োজন করলে বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভবান হবে।
গত বছর পঞ্চম বিপিএল আসরের প্রথম পর্বের কয়েকটি খেলা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। তখন মাঠের সৌন্দর্য্য ও সুযোগ-সুবিধায় মুগ্ধ হন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান ও খালেদ মাসুদ পাইলট।
খালেদ মাসুদ পাইলট তখন বাসসকে বলেন, ‘এটি কেবল বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়াম। গ্রীন গ্যালারি, চা বাগান ও আকাশ ভিউ সবমিলিয়ে বিশে^র যেকোন খেলোয়াড়, পর্যটক মুগ্ধ হবে। এখানে নিয়মিত খেলা আয়োজন দরকার।’
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ খেলা দেখতে আসা দিপংকর নিলয় বলেন, আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এখন আমরা চাই নিয়মিত খেলা হোক। একটি খেলা হলে টিকিটের জন্য ভোর থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়। এখানে দর্শকও অনেক বেশি। সিলেটের ক্রীড়া পাগল দর্শকদের জন্য বিসিবি আরো বেশি বেশি খেলা দেবে বলে আমরা আশা করি।
সিলেট বিভাগীয় ক্রিড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিসিবির পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সিলেটবাসীর অনেক বড় একটি উপহার। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ সব ফরম্যাটেই আমরা একটি সুন্দর খেলা উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। দেশী-বিদেশী খেলোয়াড়দের নজর কেড়েছে এই স্টেডিয়াম। আগামীতে আরো বেশি খেলা আয়োজন হবে এখানে।
দেশের একমাত্র গ্রীন গ্যালারি থাকা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি যে কাউকে মুগ্ধ করে। রূপ আর সৌন্দর্য্যে ভরপুর স্টেডিয়ামটি লাক্কাতুরা চাবাগানের পাশে অবস্থিত। চারিদিকে সবুজ, নীল আকাশ আর ছোট টিলাবেষ্টিত স্টেডিয়াম সিলেটকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিবে, প্রত্যাশা সিলেটবাসীর।