জয়পুরহাটে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

457

জয়পুরহাট, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় আগাম জাতের সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বাজারে এসব সবজির আমদানি শুরু হয়েছে এবং দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা খুশি বলে জানান।
স্থানিয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে জেলায় শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে ৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও বেগুন ৬৮৭ হেক্টর, মরিচ ৪৩২ হেক্টর, তিল ১০৫ হে:, বরবটি ১০ হে:, ঝিংগা ৮০ হে:, কাকরোল ৪০ হে:, চিচিংগা ৫৫ হে:, চাল কুমড়া ১৭৫ হে:, কুমড়া ৩৮০ হে:, ডাটা ২৪০ হে:, পুঁইশাক ২২৫ হে:, লাল শাক ২৮০ হে:, কলমী শাক ৮৫ হে:, শষা ২৬৫ হে:, ফুলকপি ১৬ হেক্টর, বাধাকপি ১২ হেক্টর, মূলা ৪০ হেক্টর, শিম ১১৫ হেক্টর, পেঁয়াজ ২০ হেক্টর এবং পেঁপে ১৪৫ হে: জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য়করা হয়েছে। লতিরাজ কচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি। সব মিলে এবার সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৪০ মে.টন। যা জেলার সবজি চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বাড়তি লাভের আশায় আগাম জাতের শাক-সবজির চাষে ঝাঁপিয়ে পড়ে জেলার কৃষকরা। কিছু কিছু আগাম জাতের সবজি ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। জেলার পাঁচবিবি উপজেলার খাসবাট্টা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম এবার দেড় বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বাজার মূল্য ভাল পাওয়ায় তিনি খুশি বলে জানান। একই গ্রামের কৃষক নুর আলম বলেন, ১ বিঘা জমিতে মূলা চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছি। পূর্ব পারুলিয়া গ্রামের শৈলেন চন্দ্র সরকার, কমল চন্দ্র মন্ডল জানান, দশ বছর ধরে ফুল কপি ও বাধা কপি চাষ করে আসছি। অধিক লাভের আশায় আগাম জাতের কপি চাষ করে থাকেন বলে জানান। ওই এলাকায় প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে এবার ফুলকপি ও বাধাকপির চাষ হয়েছে। পারুলিয়া গ্রামটি সদরের সবজিগ্রাম নামে পরিচিত। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেরাজুল ইসলাম বলেন, সদর উপজেলায় এক হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও প্রায় ১২শ হেক্টর জমি ছাড়িয়ে গেছে ইতোমধ্যে।
জেলার সবজি হাট-বাজার গুলো সোমবার সকালে ঘুরে দেখা যায় পটল বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, করলা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, ফুলকপি ও বাধাকপি ৩০ টাকা কেজি, মূলা ১০ টাকা কেজি, শষা ২০ থেকে ২৫ টাকা, লতিরাজ কচু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি, আলু ৪০ টাকা কেজি, শিম ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, গাজর ৩০ টাকা কেজি, শষা ৩০ টাকা কেজি, কাচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি এবং লাউ প্রকার ভেদে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত পিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্র নাথ রায় বলেন, জয়পুরহাটের কৃষকরা বর্তমানে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখানকার সবজির মান খুব ভাল। সে করণে জয়পুরহাটের সবজির বাহিরে চাহিদা বেশি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে এখান থেকে সবজি নিয়ে যায়।