মেহেরপুরে রাজহাঁস পালন বাড়ছে

632

মেহেরপুর, ৯ জানুয়ারি ২০১৭ (বাসস) : জেলায় বাড়ছে রাজহাঁস পালন। গ্রামের রাস্তা ও রাস্তার পাশের ডোবা-নালাতে দলবদ্ধ রাজহাঁস চোখে পড়ে। গাঁয়ের মেয়েরা রাজহাঁস পালন করে বাড়তি আয় করছে। দুস্থ পরিবারের আর্থিক সংকট মোকাবেলাতে সহায়তা করছে রাজহাঁস পালন।
প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার প্রায় ৪শ বছর আগে থেকে রাজহাঁস পালনের প্রচলন ছিল এবং এগুলোর একটির ওজন প্রায় ১০-১২ কেজি পর্যন্ত হতো। প্রধানত মাংস উৎপাদনের জন্য রাজহাঁস পালন করা হতো। এখনো তাই করা হয়। বাংলাদেশেও মাংস উৎপাদনে রাজহাঁস পালন হয়ে আসছে এবং প্রতিবছরই এর সংখ্যা বাড়ছে। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি রাজহাঁস পালন হয় মেহেরপুর জেলাতে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মেহেরপুরের কুলবাড়িয়া, চাঁদপুর, বৈকুণ্ঠপুর, সুবলপুর, নিশ্চিন্তপুর, আমঝুপি, গাড়াবাড়িয়া, দারিয়াপুর, গাংনী, বামুন্দী কালিগাংনী গ্রামে বেশি রাজহাঁস পালন করা হচ্ছে। এসব গ্রামের রাস্তায় রাজসিকভাবে রাজহাঁসের বিচরণ চোখে পড়ে। মেহেরপুরে ভৈরব নদের দু’ পাশে ও পানিতে রাজহাঁসের ঝাঁক বেঁধে চলতে দেখা যায়। এসব হাঁস জলাশয় থেকে খাদ্য কিংবা ঘাস খেয়ে তাদের খাদ্য চাহিদা মেটায়।
রাজহাঁস হচ্ছে একমাত্র প্রজাতি যা গরু-ছাগলের ন্যায় ঘাস/লতাপাতা খেয়ে থাকে। সাধারণতঃ রাজহাঁস তার প্রয়োজনীয় খাদ্যের অর্ধেকের বেশি খাদ্য ঘাস খেয়ে পূরণ করে থাকে। এটি পালন করার জন্য তৃণময় নিম্নভূমি বিশিষ্ট এলাকা প্রাধান্য পেয়ে থাকে । এ জন্য তৃণময় এলাকায় রাজহাঁস পালন করলে খাদ্য খরচ কম হয়।
দেশীয় জাতের রাজহাঁস সারা বছরে প্রায় ১৮-২০টি ডিম দিয়ে থাকে । তবে মজার ব্যাপার হলো এ ডিমের আকার এত বড় যে, তা দেশী হাঁসের চেয়ে আড়াই গুণ এবং মুরগীর ডিমের তুলনায় প্রায় ৪গুণ বড় । প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার মতে মেহেরপুর জেলায় প্রায় ৭ হাজার রাজহাঁস আছে। ১০০টি রাজহাঁসের বাচ্চা ৩ মাস পালন করে বিক্রি করলে খরচ বাদে লাভ পাওয়া সম্ভব প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। এটি একটি পরিবারের জীবন ও জীবিকার জন্য একটি অন্যতম আয়ের উৎস হতে পারে।
সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শাহিনা আক্তার জানান, তিনি সব সময় ৩০-৪০ টা রাজহাঁস পালন করেন। পরিবারের মাংসের চাহিদা মিটিয়ে হাঁস বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি হাঁসের খাবার কেনেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আজিজ আল মামুন জানান, জেলায় প্রায় ৭ হাজার রাজহাঁস পালন করা হচ্ছে। রাজহাঁসের রোগ-ব্যাধি কম হয়। ভয় শুধু ডাক প্লেগ নিয়ে। এ রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন মাঝে মাঝে দিলে আর ভয় থাকে না।