বাংলাদেশের মেয়েরা ‘সাতকাহন’র দীপাবলির মতো এগিয়েছে : সমরেশ মজুমদার

226

চট্টগ্রাম, ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ (বাসস) : বাংলাদেশের মেয়েরা সাতকাহন উপন্যাসের দীপাবলির মতো এগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের খ্যাতিমান সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার।
আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাতিঘর আয়োজিত আলাপচারিতা অনুষ্ঠানে পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণীসহ হলভর্তি অভ্যাগতরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো সমরেশ মজুমদারের কথা শোনেন।
বাংলাদেশের জাগরণ নিয়ে উপন্যাস লেখার উচ্ছার কথা জানিয়ে সমরেশ মজুমদার বলেন, ‘১৯৪৭ সালের আগস্ট থেকে এ দেশের মানুষের ব্যাপক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ভাষা আন্দোলন মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছে। শেখ সাহেবের আন্দোলনে একাত্তর থেকে পরিবর্তন শুরু হলো। এসব যেমন দেখছি, এর বাইরে আরেকটা জাগরণ আমি দেখতে পাই। বাংলাদেশের সেই জাগরণের গল্প লেখার খুব ইচ্ছে।’
কবিতা মেয়েরা খুব পছন্দ করে উল্লেখ করে সমরেশ বলেন, ‘কবিতা লেখার ক্ষমতা অর্জন করতে হয়। জীবনানন্দ বলেছিলেন, সকলে কবিতা লেখে, কেউ কেউ কবি। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কবিতা লিখতে পারিনি। তাই গদ্য লিখেছি।’ তিনি বলেন, ‘ভালোবাসলে মন পুড়ে। এখন মন পুড়ে না বলে অনেকে প্রতারিত হয়। আগে আঙুলে আঙুল লাগলে শরীরে বিদ্যুৎ চমকাতো। চোখে চোখ পড়লে পৃথিবী বদলে যেতো। এখন তেমন হয় না।’
রবীন্দ্রনাথের কবিতা-গান মন্ত্রের মতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুঃখ পেলেই আমি রবীন্দ্রনাথের গান শুনি। আমার মন ভালো থাকলেও রবীন্দ্রনাথের গান শুনি, মন আরও ভালো হয়ে যায়।’
চা-বাগানের স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বছরে দু’বার চা-বাগানে না গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে। ৭-৮ বছর বয়সে চা-বাগানে জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলতাম। তখন একটি ৮ বছরের মেয়েকে দেখতাম। ভাইকে পিঠে নিয়ে খেলা দেখতো। ৬৫ বছর পর সেই মেয়ের সঙ্গে দেখা, সে আমার ডাক নাম বললো। আমি চমকে উঠলাম।’
‘দেশ’ পত্রিকায় প্রথম গল্প ছাপানোর স্মৃতি, ১৫ টাকা সম্মানী পেয়ে বন্ধুদের কফি হাউসে খাওয়ানো, ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ উঠে আসে আলাপচারিতায়। অপর প্রশ্নের উত্তরে সমরেশ মজুমদার বলেন, ‘আমার ছায়াতে অনিমেষকে তৈরি করেছি। আমি আর অনিমেষ এক নই।’
আলাপচারিতায় সঞ্চালক ছিলেন কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাতিঘরের সত্ত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ।