সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত কেরানীগঞ্জ

587

॥ মো. মোস্তফা কামাল ॥
কেরানীগঞ্জ, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বিদ্যুতের উপর চাপ কমাতে ও গ্রামীণ জনপথ আলোকিত করতে কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় এক হাজার সোলার স্ট্রীট লাইট। কেরানীগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়কসহ প্রতিটি অলি গলি,বাজারের মোড় সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে এ লাইট। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মসজিদ- মাদ্রাসা, এতিম খানা, মন্দির ও কবরস্থান আলোকিত হয়েছে সোলার স্ট্রীট লাইটে। বলা যায় সৌর বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে কেরানীগঞ্জ। এর ফলে সন্ধ্যার পর এলাকার জন সাধারনের চলা চলে যেমন সুবিধা হয়েছে অপর দিকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এর ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নে সৌর বিদ্যুতের প্রায় এক হাজার স্ট্রীট লাইট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে তারানগর ইউনিয়নের বছিলা সেতু হতে নিশান বাড়ি রাস্তায় ১৫০টি ও মধ্যেরচর নয়াবাড়ি হতে কোনাখোলা পর্যন্ত ১১০টি সোলার স্ট্রীট লাইট বসানো হয়েছে। তেঘরিয়া ইউনিয়নে রাজেন্দ্রপুর মোড় হতে বাঘৈর রাস্তায় ৩০টি ও চিতাখোলা থেকে বৈস্তা বাজর রাস্তায় ২২টি সোলার স্ট্রীট লাইট বসানো হয়েছে। এছাড়াও তেঘরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২শ’ সোলার স্ট্রীট লাইট বসানো হয়েছে। কোন্ডা ইউনিয়নে দক্ষিণ পানগাঁও, মোল্লা বাজার, বিবির বাজর রাস্তাসহ বিভিন্ন রাস্তা, সুভাড্যা ইউনিয়নের চুনকুটিয়া, কালিগঞ্জ, বাজার রোডসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে সোলার স্ট্রীট লাইট। কেরানীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ফ্যান চলার জন্য সোলার এসি সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে কালিন্দী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, বাঘৈর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র অন্যতম।
চুনকুটিয়া এলাকার হাজি আ. কুদ্দুস জানান, রাস্তায় চলাচলের জন্য আমাদের কোন অসুবিধা হচ্ছেনা। বিদ্যুৎ চলে গেলেও কোন সমস্যা হয়না।
সিএনজি চালক সজল জানান, সে দীর্ঘ দিন যাবত কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে সিএনজি চালায়। আগে সড়কগুলো অন্ধকার থাকার কারণে আটি থেকে কোনাখোলা আসতে নূরন্ডী এলাকায় ও মালঞ্চ হাসপাতাল এবং কোনাখোলা থেকে রাজা বাড়ি রাস্তায় রাতের অন্ধকারে প্রায় ছিনতাই এর ঘটনা ঘটতো, এমনকি অনেকের সিএনজিও ছিনতাই করে নিয়ে যেতো। এখন এ সড়ক গুলোতে সোলার স্ট্রীট লাইট বসানোর ফলে সড়কগুলো আলোয় আলোকিত হওয়ার ফলে ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেক কমে গেছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, গ্রামীণ জনপথ আলোকিত করার লক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় মনোনীত ইডকলের পি.ও ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কেরানীগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার সোলার স্ট্রীট লাইট বসানো হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। এছাড়াও প্রায় ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সোলার এসি স্থাপন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এর ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুতের চাপ কমেছে অপর দিকে এলাকার বিভিন্ন সড়ক, শিক্ষ প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আলোকিত হয়েছে। এতে সড়কগুলোতে অপরাধ কর্মকান্ড অনেকাংশে কমেছে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অপরাধীদের ধরতে অনেক সুবিধা হয়েছে। এলাকাবাসীর মধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আতংঙ্ক কমে গেছে। সোলার স্ট্রীট লাইটের সুবিধার কারণে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন প্রতিনিয়ত প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে এসে সেলার স্ট্রীট লাইটের জন্য আবেদন করছে।