বাজিস-৩ : জয়পুরহাটের সফল চারা ব্যবসায়ী ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল

349

বাজিস-৩
জয়পুরহাট-চারা ব্যবসায়ী
জয়পুরহাটের সফল চারা ব্যবসায়ী ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল
জয়পুরহাট, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : বয়সের ভারে ন্যূয়ে পড়লেও চারা তৈরির নেশা ছাড়তে পারেননি সফল চারা ব্যবসায়ী ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল। নিজের প্রয়োজনে চারা উৎপাদন শুরু করলেও বর্তমানে সুনাম অর্জন করেছেন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে।
সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ ইউনিয়নের পারুলিয়া গ্রামের চাষি ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল ১৯৭২ সাল থেকে বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন করে চলেছেন। আলাপ কালে জানা যায়, নিজের প্রয়োজনে প্রথমে চারা তৈরি শুরু করেন। পরবর্তীতে তা ব্যবসায় রুপ নেয়। ৪০ শতাংশ জমিতে ৪৪ বছর ধরে চারা উৎপাদনে সৃষ্টি করেছেন এক অসাধারণ গল্পের, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সফল চারা ব্যবসায়ী হিসেবে। ব্যবসার সফলতায় ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালানো, বিয়ের খরচ যোগান দেওয়া ও জমিজমা কেনার পাশাপাশি বাড়িঘরও তৈরি করেছেন। ৭০ বছরের ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল বয়সের ভারে ন্যূয়ে পড়লেও চারা উৎপাদনের নেশা ছাড়তে পারেননি। বাব-দাদাদের আমল থেকেই চারা তৈরির নেশায় পড়েন। বীজ বা চারা উৎপাদন সম্পর্কিত তেমন কোন প্রশিক্ষণ না থাকলেও দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতায় তিনি এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন সেবা নার্সারী। বীজ থেকে উন্নত জাতের চারা উৎপাদনের মধ্যে রয়েছে টমেটো, বেগুণ, মরিচ, ফুলকপি, বাধা কপি, পেঁয়াজ ইত্যাদি। যে মৌসুমে যে চারার প্রয়োজন হয় সেই চারা উৎপাদন করা হয় এখানে। এখানকার উৎপাদিত উন্নত জাতের বিভিন্ন সবজির চারা বর্তমানে ৭ টি জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল। জেলা গুলো হচ্ছে জয়পুরহাট সহ রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা জেলা। স্থানীয়ভাবে ছাড়াও বিভিন্ন জেলার কৃষক ও চারা ব্যবসায়ীরা নার্সারীতে এসেই চারা কিনে নিয়ে যান। চারা উৎপাদনের খরচ বাদে প্রতি বছর ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন বলে জানান ক্ষিতিশ চন্দ্র। বয়স বেশি হওয়ায় চারা উৎপাদনের কাজে বর্তমানে ছেলে মুত্যুঞ্জয় চন্দ্র মন্ডল সহযোগিতা করে থাকেন। চারা উৎপাদনে ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডলের সফলতায় আশে পাশে আরো কয়েকটি চারা উৎপাদন নার্সারী গড়ে উঠেছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান নার্সারী মালিকরা।
বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন ও সবজি চাষে জয়পুরহাট জেলা উন্নত পর্যায়ে থাকলেও এখানে সরকারি কোন বীজ বা চারা উৎপাদন খামার নেই। ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল বলেন, অধিকহারে বা উন্নত জাতের সবজির চারা উৎপাদনের জন্য বীজের গুণাগুণ সম্পর্কে জানা এবং উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়া শেখার জন্য একটি খামার প্রয়োজন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষিবিদ সেরাজুল ইসলাম বাসস’কে বলেন, কৃষি উৎপাদনে জয়পুরহাট জেলা শীর্ষে রয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণে কাজ করছে সরকার।
বাসস/সংবাদদাতা/১০৫২/গিউ/-নূসী