প্যালিয়েটিভ সেবা দিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

320

ঢাকা, ২৩ মে, ২০১৮ (বাসস) : নিরাময় অযোগ্য রোগীদের প্যালিয়েটিভ সেবা দিতে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আজ বিএসএমএমইউ এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড হসপিস এন্ড প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্সের (ডব্লিউএইচপিসিএ) মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া এবং ডব্লিউএইচপিসিএ’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর স্টিফেন কোন্নর পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংস্থার গ্লোবাল এডভোকেসি ডিরেক্টর মিস ক্লেয়ার মার্গারেট মরিস।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়ার সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো: শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান,প্যালিয়েটিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ, ডব্লিউএইচপিসিএ’র গ্লোবাল এডভোকেসি ডিরেক্টর মিজ ক্লেয়ার মার্গারেট মরিস প্রমুখ।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, প্যালিয়েটিভ সেবাকে রাজধানীর বাইরে নারায়ণগঞ্জে প্রসারিত করা একটি অন্যন্য সাধারণ উদ্যোগ। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিরাময় অযোগ্য,জীবন সীমিত ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও পরিচর্যায় ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া, ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া বলেন, বাংলাদেশসহ বর্তমান বিশ্বে নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জন্য প্যালিয়েটিভ সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সেবা। দেশেও এ সেবাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ধরণের রোগীদের প্রকৃতপক্ষে দেখার কেউ নেই। তাই প্যালিয়েটিভ সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিএসএমএমইউ সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর কোনো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান নেই। ধারণা করা হয় যে, দেশে দশ লক্ষ ক্যান্সার রোগী বাস করেন এবং প্রতি বৎসর ২ থেকে ৩ লক্ষ নতুন রোগী ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই সব রোগীর শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নিরাময় অযোগ্য অবস্থায় চিকিৎসকদের কাছে আসেন।এই সব রোগীর জন্য দেশে কোনো সংগঠিত চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা নেই। অল্প ব্যয়ে, সীমিত প্রশিক্ষণে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নিরাময় অযোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি জাতীয় উপসর্গ প্রশমন চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা এবং ব্যথামুক্ত অন্তিম সময় নিশ্চিত করতে পেরেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে যে কোনো মুর্হূতে এমন ৬ লক্ষ মানুষ আছেন যাদের প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রয়োজন। ২০১১ সাল থেকে বিশ্বে প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশী সংস্থা এই সেবার সাথে জড়িত। প্রয়োজনের তুলনায় এটি এখনো অত্যন্ত অপ্রতুল। বর্তমানে বাংলাদেশে ৮টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রদান করছে। ২৬তম দেশ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের নাম পরিচিতি লাভ করেছে। দেশে প্যালিয়েটিভ মেডিসিনের উপর ৫ বছরব্যপী বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ চালু হয়েছে।