লোহাগড়া ইতনা গণহত্যা দিবস আগামীকাল

328

নড়াইল, ২২ মে, ২০১৮ (বাসস) : জেলার লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গণহত্যা দিবসআগামীকাল বুধবার ২৩ মে ১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতাকামী ও নিরীহ মানুষের উপর বর্বর পাক হানাদার বাহিনী যে অত্যচার, খুন, ধর্ষন ও গনহত্যা চালিয়েছিল সেই দুসঃহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামবাসী।
জানাগেছে, মুক্তিযুদ্ধে লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদী তীরবর্তী ইতনা গ্রামের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। যুদ্ধকালীন সময়ে ইতনা হাইস্কুল মাঠে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এবং এখান থেকেই শত্রু পক্ষের উপর আক্রমণের নানা কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতো। এ গ্রামের উল্টোদিকে মধুমতির ওপারে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার চরভাটপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহৎ ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়। পাকবাহিনী বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ২২মে দুপুরে চরভাটপাড়া গ্রামে ঢুকে নিরীহ লোকজনের ওপর হামলা-নির্যাতন শুরু করে। এ সময় মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং হানাদার বাহিনীর সঙ্গে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। প্রায় দু’ঘন্টা ব্যাপী যুদ্ধে চার পাকসেনা আহত হয়। পাকসেনারা পিছু হটার সময় চরভাটপাড়া গ্রামের কৃষক অনিল কাপালীকে গুলি করতে গেলে গুলি শেষ হয়ে যায়। এসময় কৃষক অনিল কাপালী এক পাক সেনার কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে মধুমতি নদীতে ফেলে দিয়ে সাঁতার কেটে ইতনা গ্রামে আশ্রয় নেন। ক্ষিপ্ত পাক সেনারা ২৩ মে ভোরে ইতনা গ্রামে এসে ৫টি ভাগে বিভক্ত হয়ে একের পর এক বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর। এদিকে নারী-পুরুষসহ ৩৯ জনকে হত্যা করে পাক বাহিনী। ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় নিরীহ মানুষ। সেদিন নিহতদের লাশ দাফনের জন্য লোক খুঁেজ পাওয়া যায়নি। নিহতদের স্বজনরা লাশগুলো গোসল না করিয়ে কোনরকম মাটি চাপা দিয়ে রাখে। সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি নিহতের স্বজনরা। লোমহর্ষক সেই ঘটনার কথা মনে পড়লে আতকে ওঠেন স্বজনরা।
এদিকে দিবসটি পালন উপলক্ষে স্থানীয়দের উদ্যোগে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।