কুমিল্লার লালমাই পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে

681

॥ অশোক বড়ুয়া ॥
কুমিল্লা, ২৭ নভেম্বর ২০১৮(বাসস) : কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ী অঞ্চল প্রাচীন যুগ মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের সভ্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রাচীনতম যুগের ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্বিক বৌদ্ধ নিদর্শন শালবন বিহারসহ ৭২টি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন, ময়নামতির রানীর বাংলো, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীনতম চন্ডীমুড়া মন্দির এবং মুসলিম আদিনামূড়া মাজার লালমাই পাহাড়কে সুষমামন্ডিত করেছে। ১৯৫০ সালের পর ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে স্থাপিত আন্তর্জাতিক মানের বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, ক্যাডেট কলেজ, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে রেসিডেন্সিয়াল হাই স্কুল, সরকারী টিটি কলেজ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, ইস্পাহানী পাবলিক হাইস্কুল ও কলেজ, সেনানিবাস, বিজিবি ব্যাটালিয়ান ও সেক্টর কার্যালয় ক্যাম্প, ময়নামতি হাইস্কুল এন্ড কলেজ আধুনিক সভ্যতার পীঠস্থান হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর ও দক্ষিণে দীর্ঘ প্রায় ১৫ কিলোমিটার উচ্চ লালমাই পাহাড়ের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন প্রাচীন ও মধ্য যুগের প্রাচীন তম সভ্যতার সাথে আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় গড়ে উঠায় পর্যটন নগরী প্রতিষ্ঠায় এক সম্ভাবনাময় ঐতিহাসিক স্থানে পরিণত হয়েছে।
প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড: মো: আতাউর রহমান জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে প্রাচীন মধ্য যুগ এবং আধুনিক সভ্যতার প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন সম্বলিত ঐতিহ্যবাহী লালমাই পাহাড় পর্যটন নগরী হিসেবে আধুনিকায়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এক সম্ভাবনায় পীঠস্থান। তিনি জানান চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন ৭২টির মধ্যে কুমিল্লা লালমাই পাহাড়ী অঞ্চলেই ৩০টি প্রাচীন ও মধ্য যুগের ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শতাব্দীর প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন রয়েছে। ৫০ এর দশকে কুমিল্লা লালমাই পাহাড় খননকালে পাহাড়ের মধ্যবর্তীস্থানে শালবন বিহার আবিস্কৃত হয়। লালমাই পাহাড় খননকালে পহাড়ের মধ্যবর্তীস্থানে শালবন বিহার আবিস্কৃত হয়। লালমাই পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে শালবন বিহার আবিস্কৃত হয়।
লালমাই পাহাড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যস্তরে ও বাইরে উদ্ধারকৃত প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন ভোজরাজায় বাড়ী, রুপবান মুড়া, আনন্দ বিহার, কোটিল্যামূড়া, ছাড়পত্র মুড়া, আদিনামুড়া মাজার, চন্ডীমুড়া মন্দির, রানীর বাংলো পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থান। প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক জানান সভ্যতার লালনভূমি শিক্ষাসংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের প্রত্নতাত্বিক নির্দশনসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে পর্যটকদের আর্কষনীয় করা হলে পর্যকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
ড. মো. আতাউর রহমান জানান সরকার সম্প্রতি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা সদরের উপমহাদেশের প্রখ্যাত নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ী এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী সচীন দেববর্মনের বাড়ী দুইটি প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর সংরক্ষিত প্রত্নসম্পদ হিসেবে গ্রহণ করেছে। লালমাই পাহাড়ী অঞ্চলের সভ্যতাকে লালন করার জন্য পযর্টকদের আরো আকর্ষনীয় এবং করতে এখানে আরো কয়েকটি জাদুঘর স্থাপন এবং প্রাচীনতম প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনসমূহের খনন কাজ জোরদার করে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আরো উদ্যোগ নেয়া দরকার।
উল্লেখ্য,প্রতিমাসে দেশী-বিদেশী প্রায় ৪০ হাজার দর্শক ময়নামতির জাদুঘর পরিদর্শনে আসেন। পর্যটন নগরী হিসেবে এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পর্যটক আরো বৃদ্ধি পাবে।