বাজিস-৪ : ভোলায় আজকের এ দিনে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৮২ জন যাত্রী

350

বাজিস-৪
ভোলা-কোকো-ট্রাজেডি
ভোলায় আজকের এ দিনে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৮২ জন যাত্রী
ভোলা, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আজ ২৭ নভেম্বর সোমবার কোকো ট্রাজেডি। ভোলার ইতিহাসে একটি ভয়াবহ শোকাবহ দিন। ৯ বছর আগে ২০০৯ সালের এ দিনে জেলার লালমোহন উপজেলায় কোকো লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৮২জন যাত্রী প্রাণ হারায়। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় স্বজনহারা মানুষের কান্না আজো থামেনি। সেদিনের কথা মনে করে আজো আতঁকে উঠে মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনা ঘটলেও আজো লালমোহন-ঢাকা রুটে চালু হয়নি নিরাপদ লঞ্চ সার্ভিস। এখনও ধারন ক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলছে অধিকাংশ লঞ্চ।
এলাকাবাসী জানায়, কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজনহারা লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নূরে আলম সাগর, তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন, শ্যালিকা হ্যাপি বেগমকে হারিয়েছেন। নূরে আলম ঈদুল আজহা উপলক্ষে নববধূ ও শ্যালিকাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু সেই দুর্ঘটনায় ৩ জনই মারা যায়। নববধূর ওই লাশের কথা মনে করতেই আজও আতঁকে ওঠেন ওই পরিবারের সদস্যরা।
আব্দুর রশিদের পরিবারের মত কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজন হারা অন্যান্যরাও তাদের বাঁধ ভাঙ্গা কান্নাকে চেপে রাখছেন অতি কষ্টে। স্বজন হারানোর শোকে কাতর ওই সকল পরিবার এখন বাকরুদ্ধ।
একই এলাকার বাকলাই বাড়ির শামসুন নাহার স্বামী, সন্তান, দেবরসহ একই বাড়ির ১৬ জন নিয়ে কোকো লঞ্চে রওনা হয়েছিল বাড়িতে ঈদ করার জন্য। বাড়ির কাছের ঘাটে এসেই লঞ্চডুবিতে নিহত হয় তার মেয়ে সুরাইয়া (৭), ভাসুরের মেয়ে কবিতা (৩) ও দেবর সোহাগ (১৩)। সেই থেকেই শামসুন নাহার আদরের মেয়ের শোকে কাতর। শামসুন নাহারের মত এ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন পিতা-মাতা, কেউ হারিয়েছে সন্তান, কেউবা ভাই-বোন আর পরিবারের উপর্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে। স্বজনদের কান্না যেন এখনও থামেনি। সেদিনের সেই মর্মান্তিক ট্রাজেডি’র কথা মনে করে শোক সাগরে ভাসছে পুরো দ্বীপজেলা, বিশেষ করে লালমোহন উপজেলা।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৬ নভেম্বর ঢাকা থেকে ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ভোলার লালমোহনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। রাতে লালমোহনের নাজিরপুর ঘাটের কাছে এসে যাত্রী চাপে ডুবে যায় লঞ্চটি।
এদিকে কোকো ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে বিশেষ স্বরনসভা, দোয়া মোনাজাত, কালো পতাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বাসস/এইচ এ এম/কেইউ/১২০৯/নূসী