বিদেশের মাটিতে ৫৫ বছর পর প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করলো ইংল্যান্ড

753

কলম্বো, ২৬ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : বিদেশের মাটিতে ৫৫ বছর পর প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করলো ইংল্যান্ড। শ্রীলংকার বিপক্ষে কলম্বোতে সিরিজের তৃতীয় শেষ টেস্ট ৪২ রানে জয় পায় জো রুটের নেতৃত্বাধীন ইংলিশরা। এই জয়ে শ্রীলংকাকে প্রথমবারের মত ও বিদেশের মাটিতে ১৯৬৩ সালের পর কোন প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করলো ইংল্যান্ড। ১৯৬৩ সালে বিদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে কিউইদের হোয়াইটওয়াশ করেছিলো টেড ডেক্সটারের নেতৃত্বাধীন দলটি। এছাড়া টেস্ট ফরম্যাটে শ্রীলংকাকে প্রথমবারের মত হোয়াইটওয়াশ করলো ইংল্যান্ড। চলতি সফরে ওয়ানডে ও টি-২০র পর টেস্ট সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড।
ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষেই কলম্বো টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ইংল্যান্ড। কারণ শ্রীলংকাকে ৩২৭ রানের টার্গেট দিয়ে ৫৩ রানের মধ্যে শ্রীলংকার ৪ উইকেট তুলে নেয় ইংলিশরা। তাই জিততে ম্যাচের শেষ দু’দিনে শ্রীলংকার আরও ২৭৪ রান, ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিলো ৬ উইকেট।
চতুর্থ দিনের শুরুটা দেখেশুনেই করেছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস ও লক্ষন সান্দাকান। তবে এই জুটি বেশি দূর একত্রে যেতে পারেননি। দিনের দশম ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ৭ রান করা সান্দাকানকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান বাঁ-হাতি স্পিনার জ্যাক লিচ।
৮২ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মেন্ডিস ও রোশন সিলভা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ধৈর্য্য সহকারে লড়াই করতে থাকেন তারা। এতে শ্রীলংকার স্কোর বড় হতে থাকে। এরমাঝে দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন মেন্ডিস। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার। রান আউটের ফাঁেদ পড়ে ব্যক্তিগত ৮৬ রানে থেমে যান মেন্ডিস। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২৯ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান মেন্ডিস। ষষ্ঠ উইকেটে মেন্ডিস ও সিলভা ১০২ রানের জুটি গড়েন।
মেন্ডিসের বিদায়ে শ্রীলংকাকে লক্ষ্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব পান সিলভা ও উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলা। কারণ এরাই ছিলেন দলের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। কিন্তু শ্রীলংকাকে হতাশ করেছেন তারা। জুটিতে ৩০ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি সিলভা ও ডিকবেলা। লিচের তৃতীয় শিকার হয়ে ১৯ রানে থেমে যান ডিকবেলা।
সতীর্থকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া ডিকবেলা। ইংল্যান্ডের মঈন আলীর ঘুর্নি সামলাতে না পেরে লেগ বিফোর ফাঁেদ পড়ে ৬৫ রানে থেমে যান তিনি। তার ১৬১ বলের ইনিংসে ৪টি চার ছিলো। তিনি যখন ফিরেন তখন শ্রীলংকার রান ছিলো ৯ উইকেটে ২২৬। এ অবস্থায় নিশ্চিত জয়ের গন্ধই পাচ্ছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু ইংল্যান্ডের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেন শ্রীলংকার শেষ দুই ব্যাটসম্যান অধিনায়ক সুরাঙ্গা লাকমল ও মালিন্দা পুস্পকুমারা। দাপট দেখিয়ে রান তুলছিলেন তারা। এক্ষেত্রে বেশি পারদর্শী ছিলেন পুস্পকুমারা।
৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেন বোলার পুস্পকুমারা। এতে ম্যাচ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে শ্রীলংকা। কিন্তু দলীয় ২৮৪ রানে লাকমালকে শিকার করে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন লিচ। পুস্পকুমারার লড়াই বৃথা হয়ে যায়। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন পুস্পকুমারা। ১১ রান করেন লাকমল। জুটিতে রান ছিলো ৫৮। ইংল্যান্ডের মঈন ও লিচ ৪টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো ও সিরিজ সেরা হন একই দলের বেন ফোকস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ইংল্যান্ড : ৩৩৬ ও ২৩০, ৬৯.৫ ওভার (বাটলার ৬৪, স্টোকস ৪২, পেরেরা ৫/৮৮)।
শ্রীলংকা : ২৪০ ও ২৮৪, ৮৬.৪ ওভার (মেন্ডিস ৮৬, সিলভা ৬৫, লিচ ৪/৭২)।
ফল : ইংল্যান্ড ৪২ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতলো ইংল্যান্ড।
ম্যাচ সেরা : জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড)।
সিরিজ সেরা : বেন ফোকস (ইংল্যান্ড)।