জয়পুরহাটে পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে

319

জয়পুরহাট, ২০ মে, ২০১৮ (বাসস) : কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্ববধানে জয়পুরহাট জেলায় পাট চাষে কৃষকরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চলতি ২০১৮-১৯ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৭১১ হেক্টর।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাট কাটিকে ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া এসব কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে হাতে কলমে চাষিদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখাসহ অন্যান্য কার্যক্রম ।
সূত্রটি আরো জানায়, বিগত দশ বছরের পাট চাষের হিসাবে দেখা যায়, ২০০৭-২০০৮ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৫শ হেক্টর অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৬২৫ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছে ২২ হাজার ৫৭৪ বেল। ওই বছর পাটের মূল্য ছিল ৪৫০ থেকে ৫শ টাকা মণ। ২০০৮-০৯ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৪শ হেক্টর। এতে পাট উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার ৬শ ৩৬ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৫শ থেকে ৬শ টাকা মণ। ২০০৯-১০ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯শ ৬৯ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর। এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২৩ হাজার ৭শ ৮০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮শ থেকে ৯শ টাকা মণ। ২০১০-১১ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল একই ১ হাজার ৯শ ৬৯ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬শ ৯২ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ৯শ ৫ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল বাম্পার ১ হাজার ৫শ টাকা থেকে ২ হাজার ২শ টাকা মণ ।
২০১১-১২ মৌসুমে ৩ হাজার ৫শ ৪৫ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৪ হাজার ২শ ৯৪ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৩শ ৮ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকা মণ। ২০১২-১৩ মৌসুমে ৩ হাজার ২শ ৪২ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৩ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ১শ ১০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১২শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা মণ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩ হাজার ৪শ ১৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অর্জিত হয় ২ হাজার ৮শ হেক্টর । এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২০ হাজার ৮শ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৪ শ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ২ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯ শ ২৭ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৫ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত , ২০১৬-১৭ মৌসুমে ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯১০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ২ শ ৯১ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৩ শ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত ও ২০১৭-১৮ মৌসুমে ২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১২০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪২ হাজার ৪ শ ৩২ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত ।
কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বাসস’কে জানান, চলতি ২০১৮-১৯ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হলেও ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৭১১ হেক্টর। আবহাওয়া ভাল থাকায় এবারও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।