নেইমারের পেনাল্টিতে উরুগুয়েকে হারালো ব্রাজিল

290

লন্ডন, ১৭ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : পেনাল্টি থেকে নেইমারের একমাত্র গোলে উরুগুয়েকে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে ব্রাজিল।
আর্সেনালের গোম গ্রাউন্ড এমিরেটস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচটিতে ব্রাজিলের অধিনায়ক নেইমারকে বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের সেই ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ থেকে প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে ৭৬ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন পিএসজি তারকা। যদিও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে যথেষ্ঠ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। ডানিলোকে ডি বক্সের মধ্যে মিডফিল্ডার দিয়েগো লাক্সাল্টের ফাউল থেকে ইংলিশ রেফারি ক্রেইগ পওসন পেনাল্টির নির্দেশ দেন।
উরুগুয়ের বিপক্ষে শেষ ১০টি মোকাবেলায় এই ম্যাচ নিয়ে এখনো অপরাজিত থাকলো ব্রাজিল। ২০০১ সালের পর থেকে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আর পরাজিত করতে পারেনি উরুগুয়ে। আগামী বছর ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকা আসরকে সামনে রেখে ব্রাজিল এখন থেকেই নিজেদের প্রস্তুতি সেড়ে রাখার কাজটি করে যাচ্ছে। মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের মিল্টন কেইনেসে ক্যামেরুনের বিপক্ষে অপর প্রীতি ম্যাচেও তারা এই জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে। আর চলতি বছর এটাই হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের সর্বশেষ ম্যাচ। বেলজিয়ামের কাছে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজিত হবার পর এই নিয়ে রেকর্ড টানা পাঁচটি প্রীতি ম্যাচে জয়ী হলো সেলেসাওরা।
ব্রাজিল কোচ তিতে বলেছেন, ‘এটা ছিল দক্ষিণ আমেরিকান ডার্বির মর্যাদার একটি ম্যাচ। উরুগুয়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। তাদের দলে বেশ কিছু বিপদজনক খেলোয়াড় রয়েছে। আমরা তাদের নিয়ন্ত্রন করতে পেরেছি। এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচে আমরা কোন গোল হজম করিনি।’
উরুগুয়ের ম্যানেজার অস্কার তাবারেজ বলেছেন, ‘নেইমার বেশ স্বাধীনভাবে খেলেছে। আমরা তাকে ভালভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারিনি। কিন্তু আমি মনে করি আমাদের তরুন দলটি ব্রাজিলের সাথে বেশ ভালই মানিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বিতর্কিত পরিস্থিতির বিষয়টা সত্যিই লজ্জাজনক।’
শত সহ¯্র মাইল দুরে রিও অবস্থিত হলেও উত্তর লন্ডনের স্টেডিয়ামে কাল ঠিকই তারকা সমৃদ্ধ প্রিয় দলের খেলা দেখতে হলুদ-সবুজ সমর্থকদের কমতি ছিলনা। এতেই বিশ্বব্যপী ব্রাজিলের অভিবাসি জনগনের সংখ্যাধিক্য আবারো প্রমানিত হয়েছে। হলোওয়ে রোডে যেন কাল মারাকানার আবহ বিরাজ করছিল। আর পুরো ম্যাচেই নেইমার ছিলেন মধ্যমণি। সে যখন বল স্পর্শ করেছে তখনই সমর্থকরা উচ্ছসিত ভাষায় জানান দিয়েছে তাদের দলে একজন নেইমার আছে যিনি বিশ্বের যেকোন দলকে একাই পরাস্ত করতে যথেষ্ঠ।
ম্যাচের শুরুতেই নেইমারের ফ্রি-কিক দারুন দক্ষতায় আটকে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক মার্টিন কামপানা। ফিলিপ লুইসের ক্রস থেকে গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে নেইমার বল জালে জড়ালেও অফ-সাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। ২৩ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের শট আটকাতে কষ্ট করতে হয়নি ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকারের। ঘরের মাঠে উরুগুয়ের আর্সেনাল মিডফিল্ডার লুকাস টোরেইরা নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। উল্টো ২৪ মিনিটে নেইমারকে ফাউলের অপরাধে তাকে হলুদ কার্ড পেতে হয়েছে। এই ফাউলের পর থেকে দুই দলের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, যে কারনে রেফারি পওসনকে প্রথমার্ধে দুই দল মিলিয়ে পাঁচটি হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে।
বিরতির ঠিক পরপরই সুয়ারেজের ক্রস থেকে এডিনসন কাভানির শট কোনমতে রক্ষা করেন এ্যালিসন। সুয়ারেজের লো ফ্রি-কিক ধরতেও বেশ কষ্ট করতে হয়েছে এ্যালিসনকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই নেইমারকে আটকাতে বারবার কঠিন ট্যাকেল করতে হয়েছে উরুগুয়েকে। আর এতে করে নেইমারের হতাশাও বেড়েছে। শেষ পর্যন্ত ৭৬ মিনিটে নেইমার তার প্রতিশোধ নিতে পেরেছেন।