ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে নেশন্স লীগের চূড়ান্ত পর্বে খেলার পথ প্রলম্বিত করল স্পেন

211

জাগ্রেব, ১৬ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : ক্রোয়েশিয়ার কাছে পরাজিত হওয়ায় নেশন্স লীগের চূড়ান্ত পর্বে খেলার পথটি প্রলম্বিত হলো স্পেনের। গত রাতে অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ক্রেয়েশিয়ার কাছে ৩-২ গোলে হেরে চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছানোর সুযোগ হাতছাড়া করেছে তারা। ম্যাচের ইনজুরি টাইমে (৯৩তম মি.) ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে জয়সুচক গোলটি করেছেন টিন জেদভাই।
জেদভাইর ওই বিলম্বিত গোলটি জার নম্বর গ্রুপ থেকে ফাইনাল পর্বে খেলার পথ উন্মুক্ত হয়ে গেছে স্পেন, ক্রেয়েশিয়া এবং ইংল্যান্ডের জন্য। বর্তমানে গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে স্পেন। আগামী রোববার ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করবে ক্রেয়েশিয়া। ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচটি যদি ড্র হয় তাহলে ফাইনাল পর্বে খেলার সুযোগ থাকবে স্পেনের। অন্যথায় ম্যাচের বিজয়ী দল সুযোগ পাবে ফাইনাল পর্বে খেলার।
জাগ্রেবে অনুষ্ঠিত ম্যাচে অবশ্য এমনিতেই জয়ের দাবীদার ছিল ক্রেয়েশিয়া। ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন জেদভাই। গোল দুটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। এর সুবাদে শেষ পর্যন্ত স্মরনীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ক্রোয়েশিয়া।
শুরুতে আন্দ্রেই ক্রামারিচ গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন ক্রেয়েশিয়াকে। এভাবে দুইবার এগিয়ে যাওয়া দলটির বিপক্ষে গোল করে দুই বাাই স্পেনকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন দানি সেরেরোস ও সার্জিও রামোস। অবস্থা দৃষ্টে এক পয়েন্ট পেয়ে ফাইনাল পর্বে যাওয়ার পথ অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছিল লুইস এনরিখের দল। কিন্তু ইনজুরি টাইমে দেভাইর গোল তাদের সে আশা পুরণ হতে দেয়নি।
এই জয়ে ফাইনালে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করার জন্য ওয়েম্বলি সফরে যাবে ক্রোয়েশিয়া। অপরদিকে এনরিখের অধীনে পরপর দুই ম্যাচে হেরে স্প্যানিশদের সহজ সুযোগটি কঠিন সমীকরণের মধ্যে পড়ে গেছে। গত মাসে ইংল্যান্ডের কাছেও একই ব্যবধানে হার মেনেছিল স্প্যানিশরা।
খেলা শেষে এনরিখ বলেন, ‘দলের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে আমি সত্যি উদ্বিগ্ন। এ সব ক্ষেত্রে উন্নতি করতে হবে। তবে আমি মনে করি আজকের ম্যাচটি আমাদের দিকে স্বচ্ছ ছিলনা।’ ক্রেয়েশিয় কোচ জøাটকো ডেলিচ বলেন, ‘দারুন এই ম্যাচে আমরা পুরস্কৃত হয়েছি।’
তবে স্পেন এখন অবনমনের শংকা থেকে মুক্ত রয়েছে। এই শংকার মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ড ও ক্রেয়েশিয়া। রোববার ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে যে দল হেরে যাবে তাদের উপরই নেমে আসবে অবনমনের খড়গ। গোলের মাধ্যমে ড্র কিংবা হেরে গেলে ইংল্যান্ডের উপর নেমে আসবে অবনমনের খড়গ। অপরদিকে ক্রেয়েশিয়া যদি হেরে যায় কিংবা গোলশুন্য ড্র করে, তাহলে তাদেরেকই অবনমনের পথ ধরতে হবে।
এনরিখ বলেন, ‘এসব সমীকরণই বলে দিচ্ছে এই গ্রুপটি কত কঠিন। যদিও আমাদের সামনে এখনো সুযোগ আছে ।’
তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও গোল শুন্যভাবে শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ৫৪তম মিনিটে গোল খড়া দূর হয় ম্যাচে। বাঁ দিক থেকে পেরিসিচের হেডে বাড়ানো বল ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ক্রেয়েশিয় ফরোয়ার্ড আন্দ্রেই ক্রামারিচ (১-০)।
তবে ২ মিনিটের মধ্যেই সমতা ফিরে পায় স্পেন।। ৫৬তম মিনিটে বাঁ-দিক থেকে ইসকোর পাস থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল করে স্পেনকে সমতায় ফেরান রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার দানি সেরেরোস (১-১)।
৬৯তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে লুকা মড্রিচের বাড়ানো ক্রসে ডিফেন্ডার জেদভাই হেডে বল জালে পাঠালে ফের এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া (২-১)। জাতীয় দলের হয়ে এটাই ছিল তার প্রথম গোল।
৭৮তম মিনিটে অধিনায়ক সার্জিও রামোস পেনাল্টি থেকে গোল করে ফের সমতায় ফেরায় স্পেনকে। ডি-বক্সে ডিফেন্ডার শিমে ভারসালকোর হাতে বল লাগার কারণে পেনাল্টিটি পেয়েছিল স্প্যানিশরা।
অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে আসে ফরাফল নির্ধারনি গোল। বদলি হিসেবে নামা মিডফিল্ডার ইয়োসিপ ব্রেকালোর শট দারুণ নৈপুণ্যে ডি গিয়া রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বলে কোনাকুনি শটে জালে পাঠান জেদভাই।
এর ফলে চার ম্যাচে দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে এখনো গ্রুপের শীর্ষে আছে স্পেন। অপরদিকে তিনটি করে ম্যাচ খেলা ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে সমান অবস্থানে রয়েছে।