বাসস ক্রীড়া-১৪
ক্রিকেট-ঢাকা টেস্ট
মুশফিকের ডাবল ও মোমিনুলের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ বাংলাদেশের
ঢাকা, ১২ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : মুশফিকুর রহিমের ডাবল ও মোমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ৭ উইকেটে ৫২২ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ রান বাংলাদেশের। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। এই ইনিংসে মুশফিক অপরাজিত ২১৯ ও মোমিনুল ১৬১ রান করেন। জবাবে নিজের প্রথম ইনিংস শুরু করে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ২৫ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৯৭ পিছিয়ে জিম্বাবুয়ে।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই সেঞ্চুরি করেন মোমিনুল ও মুশফিক। মোমিনুল ১৬১ রানে ফিরলেও, দিন শেষে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে যান মুশি। ক্রিজে তার সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয় প্রথম দেড় ঘন্টা ভালোভাবেই পার করে দেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। দলীয় স্কোর সাড়ে তিনশ পার করেন দু’জনে। ৩৬ রানে থাকা মাহমুদুুল্লাহকে শিকার করে দ্বিতীয় দিন জিম্বাবুয়েকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার কাইল জার্ভিস। এই ইনিংসে চতুর্থ উইকেট ছিলো জার্ভিসের।
বাংলাদেশ দলপতিকে শিকার করার কিছুক্ষণ বাদে তৃতীয়বারের ও বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেন জার্ভিস। তার পঞ্চম শিকার ছিলেন বাংলাদেশের আরিফুল হক। ৪ রান করেন আরিফুল। ৩৭৮ রানে আরিফুলের বিদায়ের পর ক্রিজে মুশফিকের শিকার হন অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।
ব্যাট হাতে আগের ১৫ টেস্টে নিজেকে খুব বেশি প্রমান করতে না পারলেও, আজ মুশফিকের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন মিরাজ। সতীর্থর ব্যাটিং-এ উৎসাহী হয়ে স্বাচ্ছেন্দ্যে রান তুলেছেন মুশফিক। ফলে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর চারশ থেকে পাঁচশও ছাড়িয়ে যায়। এরমাঝে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় ও বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ ডাবল-সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল একবার করে এবং মুশি দু’বার ডাবল-সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। ২০১৩ সালে গল-এ শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ডাবল-সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন মুশফিক।
ডাবল-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসে গতিপথ ধরে রেখেছিলেন মুশফিক। ফলে বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে ব্যক্তিগত রানের মালিকও হয়ে যান তিনি। এটিই মুশির ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। মুশফিক যখন ২১৯ রানে তখন বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ঘোষনা করেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ৪২১ বলে ১৮টি চার ও ১টি ছক্কায় নিজের ঝলমলে ইনিংসটি সাজান মুশফিক।
মুশফিকের মত অপরাজিত ছিলেন মিরাজও। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ১০২ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। অষ্টম উইকেটে মুশফিকের সাথে অবিচ্ছিন্ন ১৪৪ রান যোগ করেন মিরাজ। ফলে বাংলাদেশের পক্ষে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন মুশফিক ও মিরাজ। এই ইনিংসে জিম্বাবুয়ের জার্ভিস ৭১ রানে ৫ উইকেট নেন।
দিনের শেষ ভাগে ১৮ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ১৪ রান করে বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলের শিকার হন মাসাকাদজা। তবে আরেক ওপেনার ব্রায়ান চারি ১০ ও নাইচওয়াচম্যান ডোনাল্ড ত্রিরিপানো শুন্য রানে অপরাজিত আছেন।
স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ ইনিংস (প্রথম দিন ৩০৩/৫, মুশফিক ১১১*, মাহমুদুল্লাহ ০) :
লিটন দাস ক মাভুতা ব জার্ভিস ৯
ইমরুল কায়েস ক চাকাবভা ব জার্ভিস ০
মোমিনুল হক ক চারি ব চাতারা ১৬১
মোহাম্মদ মিথুন ক টেইলর ব ত্রিরিপানো ০
মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ২১৯
তাইজুল ইসলাম ক চাকাবভা ব জার্ভিস ৪
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ক চাকাবভা ব জার্ভিস ৩৬
আরিফুল হক ক চারি ব জার্ভিস ৪
মেহেদি হাসান মিরাজ অপরাজিত ৬৮
অতিরিক্ত (বা-৯, লে বা-৮, নো-৩, ও-১) ২১
মোট (৭ উইকেট ডি, ১৬০ ওভার) ৫২২
উইকেট পতন : ১/১৩ (ইমরুল), ২/১৬ (লিটন), ৩/২৬ (মিথুন), ৪/২৯২ (মোমিনুল), ৫/২৯৯ (তাইজুল), ৬/৩৭২ (মাহমুদুল্লাহ), ৭/৩৭৮ (আরিফুল)।
জিম্বাবুয়ে বোলিং :
কাইল জার্ভিস : ২৮-৬-৭১-৫ (ও-১, নো-১),
তেন্ডাই চাতারা : ২২.২-১২-৩৪-১,
ডোনাল্ড ত্রিরিপানো : ২৪.৪-৬-৬৫-১ (নো-২),
সিকান্দার রাজা : ২২-১-১১১-০,
সিন উইলিয়ামস : ৩০-৪-৮০-০,
ব্রান্ডন মাভুতা : ৩১-১-১৩৭-০,
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা : ২-০-৭-০।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস :
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ক মেহেদি ব তাইজুল ১৪
ব্রায়ান চারি অপরাজিত ১০
ডোনাল্ড ত্রিরিপানো অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-১) ১
মোট (১ উইকেট, ১৮ ওভার) ২৫
উইকেট পতন : ১/২০ (মাসাকাদজা)।
বাংলাদেশ বোলিং :
মুস্তাফিজুর : ৬-৪-১১-০,
খালেদ : ৫-৩-৬-০,
তাইজুল : ৫-৩-৫-১,
মিরাজ : ২-১-২-০।
বাসস/এএসজি/এএমটি/১৯০৫/স্বব