বিচারকদের বাস্তবতার নিরিখে তৈরি হওয়ার আহবান আইনমন্ত্রীর

685

ঢাকা, ১১ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিচারকদের বাস্তবতার নিরিখে তৈরি হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
আজ ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য আয়োজিত চতুর্থ অরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী এ আহবান জানান।
এ সময় বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের কাছ থেকে যে সেবা চায়, যা আশা করে তা দিতে কার্পণ্য করবেন না।’
আনিসুল হক বলেন, সমাজ বিচারকদের কাছ থেকে অনেক কিছু আশা করে। সমাজের অনেক সমস্যা আছে যেগুলো সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে। পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য পরিবারের শুধু একজন সদস্য মাদকাসক্ত হওয়াই যথেষ্ট।
তিনি বলেন, মাদকের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। তাই প্রশিক্ষণ শেষে বিচারকদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে ফিরে গিয়ে মাদকের ব্যাপারে সমাজের দাবী ও অবস্থার কথা বিবেচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, বিচার করার ক্ষেত্রে সমাজের চাওয়া-পাওয়াকে বিচারকদের বিবেচনায় নিতে হবে।
দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, এটিও ব্যক্তি, পরিবার, মূল্যবোধ, সমাজ ও দেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই এর বিরুদ্ধে বিচারকদেরও অবস্থান নিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতিকে একটি সংবিধান দিয়ে গেছেন। সেই সংবিধানের ২২, ৯৪(৪) ও ১১৬(গ) – এই তিনটি ধারাতেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে বলা আছে। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর এই সংবিধানকে যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী সংশোধন করে ব্যক্তি স্বার্থ ও দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ সব সময় স্বাধীন ছিলনা। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকতো তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচারের জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করতে হতো না। বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়েছে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেটাকে আইনে পরিণত না করলে অধস্তন আদালতের বিচারকরা নির্বাহী বিভাগের অধীনেই থাকতেন।
বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আল্লাহ্র ইচ্ছা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার দূরদর্শিতায় আজকে বিচার বিভাগ স্বাধীন। তবে পরের ধাপগুলো সম্পন্ন না হলে এই স্বাধীনতা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হতো।
তিনি বলেন, বিচারকরা যাতে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকে সেজন্য তাদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিচারকদের অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।