বাসস দেশ-২৫ : কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা গ্রামীণ মানুষের জীবনে এনেছে স্বস্তি

341

বাসস দেশ-২৫
সরকারি-ওষুধ
কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা গ্রামীণ মানুষের জীবনে এনেছে স্বস্তি
ঢাকা, ১০ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যেমে দেওয়া স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ গ্রামীণ মানুষের জীবনে এনেছে স্বস্তি।
এইসব ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে লাল-সবুজ মোড়কে জড়ানো ৩২ ধরনের ওষুধ। বিভিন্ন রোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ভরসা এখন বিনামূল্যে দেয়া এসব ওষুধ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাসসকে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তার ফসল। দেশের ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। গ্রামের দরিদ্র মানুষ যাতে ওষুধগুলো ঠিক মত পায় সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের যেসব অর্জনকে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ হিসাবে চিহ্নিত করছে সেগুলোর মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক অন্যতম। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আরও ১ হাজার ২৯টি ক্লিনিক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে ৩২ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬২ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ সেবা নিয়েছে। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জ জেলার টঙ্গীপাড়া থানাধীন পাটগাঁতী ইউনিয়নের ঘিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে এই কার্যক্রমের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলা সদর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার উজ্জল কুমার বাসসকে বলেন, এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কারণে দেশের দরিদ্র মানুষ সঠিক ভাবে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। পাশাপাশি তারা বিনামূল্যে ৩২ রকম ওষুধ পেয়ে থাকে। এই কারণেই ক্লিনিকগুলোতে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক রেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ জন রোগীকে এখান থেকে সেবা দেয়া হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারী কেয়া সরকার বাসসকে জানান, এই ক্লিনিকে সব চিকিৎসা হয়। ওষুধ কিনতে হয় না। ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়। আগে শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো। সময় লাগতো বেশি, টাকাও খরচ হতো। কিন্তু এখন আর শহরে যেতে হয় না। সাধারণ রোগের চিকিৎসা তারা এখান থেকেই পাচ্ছেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানার কুসম্বি কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন যাবত হাঁপানি ও শ্বাস কষ্টে ভুগছি। আমার পক্ষে ১৪ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাড়ির কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে এসেছি। এখানে সেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ-পত্র আমরা পেয়ে থাকি।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. আবুল হাসেম খান বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার কারণেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বেড়েছে। হাতের কাছে ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পেয়ে সবাই খুশি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার হওয়ায় সাধারণ মানুষের আস্থাও বেড়েছে।
তিনি বলেন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) শুক্রবার এবং সরকারি ছুটিন দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকে উপস্থিত থাকেন। তারা ক্লিনিক খোলা এবং বন্ধ করা, রোগীর উপস্থিতি রেজিস্টারে নাম তোলা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করাসহ তাদের কর্মপরিধির আওতাধীন এই মুহূর্তে যে সব কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব তা করেন।
বাসস/এসপিএল/বিকেডি/১৯৪৫/আরজি