আলো ছড়াচ্ছে সৈয়দপুরের সেতুবন্ধন পাঠাগার

355

নীলফামারী, ১০ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আলো ছড়াচ্ছে সেতু বন্ধন পাঠাগার। জেলার সৈয়পুর উপজেলার খালিশা বেলপুকুর গ্রামে গড়ে ওঠা পাঠাগারটিতে নিয়মিত পাঠকের সংখ্যা শতাধিক। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের আগ্রহ বেড়েছে বই পড়ার প্রতি।
পাখি ও প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ওই পাঠাগারটি। পাঠাগারকে ঘিরে এখন বই পড়ার আনন্দে মেতেছে খালিশা বেলপুকুর স্কুল অ্যা- কলেজের শিক্ষার্থীরা। তিন শতক জমির উপর টিনের ছাউনির এ পাঠাগারে শোভা পেয়েছে ছয় শতাধিক বই। সাহিত্য, বিজ্ঞানসহ ধর্মীয় এসব বই সংগ্রহ করেছে সেতুবন্ধনের সদস্যরা। এসব বই সংগ্রহে সহযোগিতা করেছেন দেশের সনামধন্য সাহিত্যক, লেখক, কবি ও সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা।
পাঠাগারে রয়েছে নিয়মিত পত্রিকা পড়ার ব্যবস্থা। প্রতিদিন জাতীয়-স্থানীয় একাধিক পত্রিকা পড়ে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থী ও পাঠকরা খুব সহজেই দেশ বিদেশের খবরাখবর জানছেন। এছাড়াও সেতুবন্ধন পাঠাগারে নিয়মিত কবিতা চর্চা, সাহিত্য সভা ও মাসিক গল্প লেখা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর এসব প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেতুবন্ধনের সদস্যদের প্রচেষ্টায় এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মহলের সহযোগিতায় দিনে দিনে সেতুবন্ধন পাঠাগার যেন আলোই চড়াচ্ছে। বর্তমানে পাঠাগারটি সরকারি নিবন্ধনও হয়েছে।
ওই পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক খালিশা বেলপুকুর স্কুল এ- কলেজের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুলেখা আক্তার জুই বলেন, ‘এখানে আমরা ছড়া ও গল্পের বই পড়ি। পাশাপাশি পত্রিকা পড়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খবরাখবরও জানতে পারি। সেতুবন্ধন পাঠাগারটি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হয়েছে।’
সেতুবন্ধন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় মানসম্মত পাঠাগারের সংখ্যা বাড়েনি গ্রামাঞ্চলে। তাই পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বই পড়া থেকে বঞ্চিত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। এসব শিক্ষার্থীর বই পড়ার সুযোগ করে দিতে আমরা ওই পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের মানুষ বই পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। আমরা চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়াতে। এজন্য পাঠাগারে আরো বইয়ের সমাহার ঘটাতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগিতা কাম্য।’
খালিশা বেলপুকুর স্কুল এ- কলেজের অধ্যক্ষ ফজলার রহমান প্রামানিক বলেন,‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটি একটি ব্যতিক্রমি উদ্যোগ। আমার প্রতিষ্ঠানের পাশে পাঠাগারটি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। সব বয়সের মানুষ সেখানে এসে বইসহ বিভিন্ন পত্রিকা পড়ছে। জ্ঞানের আলো ছড়াতে উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।’
উল্লেখ্য, জেলার সৈয়দপুর উপজেলার সেচ্ছাসেবী সংগঠন ২০১৩ সাল থেকে পাখি ও প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করছে। ২০১৭ সাল থেকে সংগঠনটি এলাকায় নিরক্ষমুক্ত পাঠশালা পরিচালনার পাশাপাশি ওই পাঠাগার পরিচালনা করে আসছে।