রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : গোলটেবিলে বক্তারা

210

ঢাকা, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : রাজধানীতে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে’ রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টির উপর গুরুতোরোপ করেছেন বক্তারা।
তারা বলেন,প্রত্যেক এলাকার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘জাতীয় নির্বাচন-২০১৮ ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার সংগঠন শারি এ গোলটেবিল আলোচার আয়োজন করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অসুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, মানবাধিকারকর্মী এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, মানবাধিকার কর্মী ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের যুগ্ম সম্পাদক বিভুরঞ্জন সরকার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
শারি’র নির্বাহী পরিচালক প্রিয় বালা বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় এ গোলটেবিল আলোচনায় সংখ্যালঘু নির্যাতন সংক্রান্ত একটি ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রত্যেক এলাকার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব সে এলাকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার। দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বৈষম্য বিরোধী একটি আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
মেনন বলেন,‘তৎকালিন পাকিস্তান আমল থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চলে আসছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এখন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও সরকার এর কোন দায় না নিয়ে বরং দেশে কোন ঘটনা ঘটে নাই বলে প্রচারণা চালিয়েছিল।’
তিনি বলেন, জামায়াত বিএনপি এদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশে একটি অশ্বস্তির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই ঘটনার অবসান ঘটানো হয়েছে। তবে এখন সমাজের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিরা বিভিন্ন জায়গায় সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।
এ অনুষ্ঠানে দিনাজপুর এবং বরিশালে ২০০১ এবং ২০১৪ সালে সংঘটিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের এলাকার থেকে নির্যাতনের শিকার রনজিত কুমার রায়, পুরেন দাস, সংবাদকর্মী কল্যাণ কুমার চন্দ, সংবাদকর্মী আজহারুল আজাদ জুয়েল এবং খালেদা আক্তার হেনা তাদের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সংখ্যালঘুদের হতাশ হলে চলবে না, নিজেদের দাবি আদায়ে নিজেদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।
আগামী নির্বাচনে কোন সাম্পৃদায়িক ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন না দিতে রাজনৈতিক দল গুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’