প্রথম টেস্ট জিততে বাংলাদেশ প্রয়োজন ২৯৫ রান, জিম্বাবুয়ের ১০ উইকেট

197

সিলেট, ৫ নভেম্বর ২০১৮ (বাসস) : সিলেটে অভিষেক টেস্ট জিততে স্বাগতিক বাংলাদেশের দরকার আরও ২৯৫ রান, জিম্বাবুয়ের ১০ উইকেট। জয়ের জন্য সফরকারী জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেয়া ৩২১ রানের জবাবে সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বিনা উইকেটে ২৬ রান করেছে বাংলাদেশ। এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রান করে জিম্বাবুয়ে ।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের করা ২৮২ রানের জবাবে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১৩৯ রানের লিড পায় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন শেষ সময়ে ২ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। বিনা উইকেটে ১ রান করেছিলো তারা। ফলে ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে জিম্বাবুয়ে।
উদ্বোধনী জুটিতে বড় স্কোর করতে পারেনি জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও ব্রায়ান চারি। ৪ রান করা চারিকে থামিয়ে দেন বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর ব্রেন্ডন টেইলরকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মাসাকাদজা। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হন টেইলর। তবে ৪টি চারে শুরুটা ভালোই ছিলো তার। ২৫ বলে ২৪ রান করে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের শিকার হন টেইলর।
চারি ও টেইলরকে নিয়ে না পারলেও সিন উইলিয়ামসকে বড় জুটিই গড়েন মাসাকাদজা। দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দলীয় স্কোর ১শ ছাড়িয়ে যায়। তিন অংকে পা দেয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে মাসাকাদজা ও উইলিয়ামসকে বিছিন্ন করেন মিরাজ। ৪৮ রান করা মাসাকাদজাকে লেগ বিফোর ফাঁেদ ফেলেন মিরাজ।
দলীয় ১০১ রানে অধিনায়ককে হারিয়ে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশায় ছিলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু তিন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা ও পিটার মুরকে বড় রান করতে দেননি প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেয়া তাইজুল। তিনজনকেই শিকার করেছেন তিনি। উইলিয়ামস ২০, রাজা ২৫ ও মুর শুন্য রান করেন।
৯ রানের মধ্যে তিন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এক পর্যায়ে ৬ উইকেটে ১৩০ রানে পরিণত হয় জিম্বাবুয়ে। এ অবস্থায় দলকে সামনে টেনে নেয়ার চেষ্টা করেন উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবভা ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এরপর মাসাকাদজা-উইলিয়ামস জুটি ৩৫ রান যোগ করেন। মাসাকাদজাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন মিরাজ। ১৭ রান করেন তিনি। কিছুক্ষণ পর আউট হন চাকাবভাও। ২০ রান করে এই ইনিংসে নাজমুলের প্রথম শিকার হন চাকাবভা।
এরপর জিম্বাবুয়ের শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে খুব বেশি সময় নেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। ব্রেন্ডন মাভুতাকে ৬ রানে নাজমুল ও জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান তেন্ডার চাতারাকে ৮ রানে তুলে নেন তাইজুল। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর আবারো ৫ উইকেট নিলেন তাইজুল। ফলে তার ম্যাচ ফিগার দাড়ালো ১৭০ রানে ১১ উইকেট। ২০ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এই প্রথমবার ম্যাচে ১০ বা ততোধিক উইকেট নিলেন তাইজুল। তাইজুল ছাড়াও বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ৩টি ও নাজমুল ২ উইকেট নেন।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ দশমিক ১ ওভারে বিনা উইকেটে ২৬ রান করে বাংলাদেশ। আলো স্বল্পতার কারনে ১৭ ওভার বাকী থাকতে দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। লিটন দাস ১৪ ও ইমরুল কায়েস ১২ রানে অপরাজিত আছেন।

স্কোর কার্ড :

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস-২৮২।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ১৪৩।

জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ১/০, ২ ওভার)

হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এলবিডব্লু ব মিরাজ ৪৮

ব্রায়ান চারি বোল্ড ব মিরাজ ৪

ব্রেন্ডন টেইলর ক ইমরুল ব তাইজুল ২৪

সিন উইলিয়ামস বোল্ড ব তাইজুল ২০

সিকান্দার রাজা বোল্ড ব তাইজুল ২৫

পিটার মুর ক লিটন ব তাইজুল ০

রেজিস চাকাবভা ক মাহমুদুল্লাহ ব নাজমুল ২০

ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এলবিডব্লু ব মিরাজ ১৭

ব্রান্ডন মাভুতা ক আরিফুল ব নাজমুল ৬

কাইল জার্ভিস অপরাজিত ১

তেন্ডাই চাতারা এলবিডব্লু ব তাইজুল ৮

অতিরিক্ত (বা-৪, লে বা-৪) ৮

মোট (অলআউট, ৬৫.৪ ওভার) ১৮১

উইকেট পতন : ১/১৯ (চারি), ২/৪৭ (টেইলর), ৩/১০১ (মাসাকাদজা), ৪/১২১ (উইলিয়ামস), ৫/১২১ (মুর), ৬/১৩০ (সিকান্দার) ৭/১৬৫ (ওয়েলিংটন মাসাকাদজা), ৮/১৭২ (চাকাবভা), ৯/১৭৩ (মাভুতা), ১০/১৮১ (চাতারা)।

বাংলাদেশ বোলিং :

তাইজুল : ২৮.৪-৮-৬২-৫,

নাজমুল : ৬-১-২৭-২,

আবু জায়েদ : ৭-১-২৫-০,

মিরাজ : ১৯-৭-৪৮-৩,

মাহমুদুল্লাহ : ৪-১-৭-০,

মোমিনুল : ১-০-৪-০।

বাংলাদেশ ইনিংস :

লিটন দাস অপরাজিত ১৪

ইমরুল কায়েস অপরাজিত ১২

অতিরিক্ত ০

মোট (বিনা উইকেট, ১০.১ ওভার) ২৬

জিম্বাবুয়ে বোলিং :

জার্ভিস : ৫-২-১১-০,

চাতারা : ৫-১-১৫-০,

রাজা : ০.১-০-০-০।