হবিগঞ্জে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি

352

হবিগঞ্জ, ১২ মে ২০১৮ (বাসস) : জেলার বানিয়াচংয়ে শিলাবৃষ্টিতে প্রায় ২শ’ হেক্টর জমির ধান বিনষ্ট হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলোতে আর কাস্তে লাগানো যাবে না বলেই দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। এ সময় বেশ কয়েকজন কৃষক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এছাড়াও ঝড় বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘর-বাড়িরসহ বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত পৃথক সময়ে এ শিলাবৃষ্টি হয় উপজেলার দৌলতপুর ও মক্রমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওরে।
হবিগঞ্জের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ওই দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০০ হেক্টর জমি শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষকদের প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের দাবি তাদের আরো অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ লুৎফুর রহমান বলেন, সকালে ঝড়ের সাথে সাথে ব্যাপক পরিমাণে শিলাবৃষ্টি হয়। এ সময় ওই ইউনিয়নের অন্তর্গত জোয়াইরা, মাইজ বন্দ, তবকিত্তা, আইড়ামুগুরসহ বেশ কয়েকটি হাওরের প্রায় ৪০০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই জমিগুলোতে কাস্তে ধরার মতো ধান নেই বলে জানান চেয়ারম্যান। তিনি আরো জানান, এলাকার কৃষকদের মাঝে এখন শুধু হাহাকার। অনেক বর্গাচাষি রয়েছে-এ শিলাবৃষ্টির ক্ষতিতে তাদের এখন পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তারা সরকারকে তাদের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আহাদ মিয়া জানান, সকালে শিলাবৃষ্টিতে তার ইউনিয়নের অন্তর্গত কচুয়ারআব্দা ও সুলতানপুরসহ বিভিন্ন হাওরের প্রায় ৩০০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে শিলাবৃষ্টি পুরো হাওরে ক্ষতি করেনি। সবসময় শিলাবৃষ্টি একটি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত করে যায় বলে জানান তিনি।
মক্রমপুর ইউনিয়নের হিয়ালা গ্রামের কৃষক জ্যোতিময় দাশ বলেন, তিনি অনেক খরচ করে প্রায় ১৫ একর জমিতে ধান ফলিয়েছিলেন। সকল প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে ধান ঘরে তুলার সময় শিলাবৃষ্টিতে তার সকল ধানে নিয়ে গেছে। এতে তিনি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দৌলতপুর এলাকার ওবায়দুল হক বলেন, শিলাবৃষ্টিতে ওই এলাকার কৃষকদের স্বপ্ন মলিন করে দিয়েছে। তাদের এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে কয়েকজন আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে এখন শোকের মাতম চলছে বলেও জানান ওবায়দুল।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মামুন খন্দকার বলেন, শিলাবৃষ্টিতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেগুলো পরিদর্শন করে সরকারি সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হবে।
এদিকে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে প্রচন্ড ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পল্ল¬ী বিদ্যুতের খুটি পড়ে যাওয়াসহ ঘরবাড়ির বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বিভিন্ন স্থানে সারাদিন ধরে বিদ্যুত ছিল না। হবিগঞ্জ পল¬øী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া লাইনগুলো মেরামত হলেই বিদ্যুৎ দেয়া হবে।