সাইবার অপরাধ ও জঙ্গি দমনে গণমাধ্যমের ভূমিকা গণতন্ত্র শক্তিশালী করবে : তথ্যমন্ত্রী

1177

ঢাকা, ১০ মে, ২০১৮ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, সাইবার অপরাধ ও জঙ্গি দমনে গণমাধ্যমের ভূমিকা গণতন্ত্র শক্তিশালী করবে।
ভারতের নয়া দিল্লীতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ১৫তম ‘এশিয়া মিডিয়া সামিটে’র উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানা গেছে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশসহ এশিয়া এবং বিশ্ব এ মুহূর্তে ছ’টি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। গণমাধ্যমের ভূমিকা একদিকে যেমন দারিদ্র্য, লিঙ্গবৈষম্য, জঙ্গিবাদ ও সাইবার অপরাধ নির্মূলে সাহায্য করবে, তেমনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্বায়নের সাথে মানুষকে খাপ খাওয়াতে শেখাবে।’
অধিবেশনে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং বস্ত্র মন্ত্রী স্মৃতি জুবিন ইরানী, কম্বোডিয়ার তথ্যমন্ত্রী ড. খিউ কানহারিত, কোরিয়া কমিউনিকেশন কমিশনার ড. স্যাম সগ কো, ইরানের আন্তর্জাতিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্বাস নাসেরি তাহেরী বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের এ কাজ শুধু এশিয়া নয়, সমগ্র বিশ্বকেই টেকসই, সবুজ, উন্নত, ডিজিটাল, শান্তিময় ও সমতাপূর্ণ বিশ্বায়নের দিকে এগিয়ে নেবে, সেই সাথে শক্তিশালী ও সংহত করবে গণতন্ত্রকে।’
এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভেলপমেন্ট- এআইবিডি আয়োজিত এ সম্মেলনে এশীয়-প্রশান্তসহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশের ৩৯ টি দেশের সরকারি ও বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের আড়াইশ’রও বেশি প্রতিনিধির সামনে দেশের পরিচয় তুলে ধরতে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশ উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্বসেরা, তৈরি পোষাক উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে চতূর্থ।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এভাবেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।’
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ‘মিডিয়া রেগুলেশন পলিসিজ: ইথিকস, রুলস এন্ড ল’জ’ শীর্ষক প্লেনারি অধিবেশনেও বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী ইনু। ভারতের পক্ষে এ অধিবেশনে যোগ দেন আইন ও বিচার এবং ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্প্রচার জগতের যুগান্তকারী প্রসারের সাথে সাথে তাদের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধিতে ও গণমাধ্যমের কল্যাণে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, সাংবাদিক সহায়তা নীতি প্রণীত হয়েছে, সময়োপযোগী করা হয়েছে রোয়েদাদ বোর্ড।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল যুগের সাথে নিরাপদে তাল মিলিয়ে এগুবার জন্য সাইবার অপরাধ রুখতে সকল অংশীজনকে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। এর আগে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে শুধু তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ণই নয়, তা ব্যবহারে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্যাপক প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।’
ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার এবং বস্ত্র মন্ত্রী স্মৃতি জুবিন ইরানী বিকেলে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, কম্বোডিয়ার তথ্যমন্ত্রী ড. খিউ কানহারিত এবং কোরিয়া কমিউনিকেশন কমিশন কমিশনার ড. স্যাম সগ কো’র সাথে যৌথ বৈঠক করেন।
এ সময়ে তারা এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে গণমাধ্যম ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
হাসানুল হক ইনু এসময় সকল দেশের মানুষের মাতৃভাষায় বিষয়বস্তু তৈরি ও তা ইন্টারনেটে সরবরাহের ওপর গুরুত্বারোপ করলে স্মৃতি জুবিন ইরানী একমত হন।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) মো: মোশাররফ হোসেন, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের (নিমকো) মহাপরিচালক মো: রফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল, বাংলাদেশ টেলিভিশনের পরিচালক (আন্তর্জাতিক) রাহাত আনোয়ার, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদসহ বেতার, টেলিভিশন ও নিমকোর কর্মকর্তাবৃন্দ মন্ত্রীর নেতৃত্বে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে অংশ নেন।
বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)’র প্রধান নির্বাহী এইচএম বজলুর রহমান অধিবেশন পরিচালক হিসেবে এবং এসএ টিভি’র উপদেষ্টা খ ম হারুন প্রমুখ সম্মেলনে যোগ দেন। আগামী ১২ মে শনিবার তথ্যমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।