মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে সংসদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল, ২০১৮ পাস

423

সংসদ ভবন, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে এ সম্পর্কিত অপরাধে মৃতুদন্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধান করে আজ সংসদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল, ২০১৮ পাস করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।
বিলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বহাল রাখার বিধান করা হয়েছে। অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় স্থাপন এবং প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে যে কোন স্থানে অধিদপ্তরের অধঃস্তন বা শাখা কার্যালয় স্থাপনের বিধান করা হয়।
বিলে অধিদপ্তরের কার্যাবলীসহ অ্যালকোহল ব্যতিত অন্যান্য মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন, মজুদ নিষিদ্ধের বিধান করা হয়েছে।
বিলে ওষুধ উৎপাদনে লাইসেন্স গ্রহণ সাপেক্ষে এ সব দ্রব্য উৎপাদন প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন, স্থানান্তর, আমদানি, রপ্তানি, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, ধারণ, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ অথবা ব্যবহার করার বিধান করা হয়েছে। তবে সেবন, প্রয়োগ অথবা ব্যবহার এবং পাস বলে বহন অথবা পরিবহন করা যাবে।
বিলে অ্যালকোহল উৎপাদন সম্পর্কে বিধি-নিষেধ, অ্যালকোহল পানে বিধি-নিষেধ, মাদকদ্রব্য ব্যবস্থাপত্র প্রদান সম্পর্কে বিধি-নিষেধ, লাইসেন্স প্রদান, লাইসেন্স প্রদানে বিধি-নিষেধ, লাইসেন্স ভঙ্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, লাইসেন্স বাতিল, লাইসেন্স স্থগিতকরণ, মাদকদ্রব্যের দোকান বা পানশালাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।
বিলে মাদকদ্রব্য প্রতিরোধে তল্লাশি, গ্রেফতার, আটক, ক্রোক, বাজেয়াপ্ত, তদন্ত, ব্যাংক হিসাব পরীক্ষা ও নিষ্ক্রিয়করণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে মাদকদ্রব্য পরিবহন, সংরক্ষণসহ অন্যান্য কারণে আটক অথবা গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রদান, তল্লাশি পদ্ধতি, পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি, দেহ তল্লাশির জন্য বিশেষ পরীক্ষা, মাদকদ্রব্য অপরাধ তদন্তের সময়সীমা, মাদকদ্রব্যের মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ, গোপন অভিযোগ ও নিয়ন্ত্রিত বিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।
বিলে মাদকদ্রব্য সম্পর্কিত অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ড, অর্থদন্ডসহ সর্বনি¤œ ৫ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদানসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান করা হয়েছে।
বিলে মাদকদ্রব্য জনিত অপরাধের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করার বিধান করা হয়েছে।
বিলে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, মাদকদ্রব্য অপরাধ আমলযোগ্যতা, জামিন, বিচারের বিশেষ পদ্ধতি, বিচার সমাপ্তির মেয়াদ, অভিযোগ শিশুর বিচার পদ্ধতি, ফৌজদারি কার্যবিধির প্রয়োগ, মোবাইল কোর্ট আইনের প্রয়োগ, জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা, বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধান করা হয়েছে।
বিলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে প্রথম ও দ্বিতীয় তফসিলে মাদকদ্রব্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্যাদি ব্যবহারে মাদক শুল্কের হার, দ্বিতীয় তফসিলে নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, সেলিম উদ্দিন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বেগম রওশন আরা মান্নান, বেগম নূর-ই-হাসানা লিলি চৌধুরী, নূরুল ইসলাম ওমর, ডা. আককাছ আলী সরকার, নূরুল ইসলাম মিলন ও বেগম মাহজাবীন মোরশেদ বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।