বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : রাজনীতির নামে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা পুনরাবৃত্তির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন থাকার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

176

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৩ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-বার্ন ইউনিট-ভাষণ
রাজনীতির নামে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা পুনরাবৃত্তির বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন থাকার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ যেন তাঁদের মৌলিক চাহিদাগুলোসহ উন্নত জীবন পায় সেটা নিশ্চিত করাই তাঁর কাজ এবং সেটাই করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেটা আমি করতে পেরেছি। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাঁদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছিল।
তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, আগামীতেও যদি নৌকায় ভোট দিয়ে জনগণ সেই সুযোগ দেন তাহলে অবশ্যই তাঁর সরকার এখন যে কাজগুলো শুরু করেছে সেগুলো সম্পন্ন করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুণরায় ক্ষমতায় আসলে দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠাতো করবোই উপরন্তু ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত দেশ হবে এবং ২০২১ সালে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হবে।’
তাঁর সরকার ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে কিভাবে গড়ে তুলতে চায় এজন্য শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা প্লান ২১০০’ প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্যই এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতির পিতা বলে গিয়েছিলেন ‘বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবানা’, পারে নাই। শুধু মাঝে ২১টা বছর এবং ২০০১ পরবর্তী সময়ে আরো ৮টি বছর জাতির জীবন থেকে নষ্ট হয়েছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এই সময়গুলো নষ্ট না হলে বাংলাদেশ বহু আগেই এগিয়ে যেত উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিকিৎসা সেবাকে আমরা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছি, অনলাইন চিকিৎসা সেবা চালু এবং কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।
মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে এবং তাঁর সরকার পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও পদক্ষেপ নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা পোলিও মুক্ত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের পাশাপাশি তাঁর সরকার প্রত্যেক উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাতে আগুন লাগলে তাৎক্ষণিক ভাবে নেভানোর উদ্যোগসহ জনগণকে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভবপর হয়।
তিনি বলেন, এই ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম- প্রত্যেক এলাকাকে বিবেচনায় এনে ঢাকার সব মানুষ যাতে একটু চিকিৎসা সেবাটা পায় সেজন্যই আমরা হাসপাতালগুলো তৈরি করছি। একইসাথে জেলা হাসপাতালগুলোকে আমরা যেমন উন্নত করছি। সেখানেও বার্ন ইউনিট তৈরি করছি। যাতে সেখানে পোড়া রোগীরা চিকিৎসাটা নিতে পারে। পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগে আমরা একটা করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
চিকিৎসক সৃষ্টির জন্য তাঁর সরকার সরকারি এবং বেসরকারী খাতে সারাদেশে মেডিকেল কলেজ তৈরি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান হচ্ছে অন্যদিকে পড়াশোনার সুযোগ হচেছ।
শেখ হাসিনা বলেন, হাতে মাত্র ১০ বছর সময় পেয়েছি এই ১০ বছরে যতটুকু সম্ভব আমরা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আর স্বাস্থ্যসেবার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে তা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই সময়ে ১৯ টি মেডিকেল কলেজ এবং ২৮টি ডেন্টাল কলেজ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় পঙ্গু হাসপাতালে পঙ্গুত্ব লাঘবেও তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুল ধরে বলেন, সেখানে এ হাজার শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবন তৈরী হয়ে গেছে এবং যা উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।
একইসঙ্গে গ্যাষ্টো অন্ট্রোলজিষ্ট হাসপাতাল, নিউরো, কিডনী, ক্যান্সার হাসপাতাল আধুনকায়ন এবং টেকনোলজিষ্ট তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
‘আমার দেশের মানুষ সুস্বাস্থের অধিকারী হবে এবং প্রত্যেকটি গ্রাম শহরে রূপান্তরিত হবে, সেখানে নাগরিক জীবনের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে, ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছি এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে।’
বাসস/এএসজি-এফএন/১৭১০/আরজি