শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ঝুমুর-টুসু-ভাদু’ শীর্ষক গানের আসর অনুষ্ঠিত

409

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০১৮(বাসস) : লৌকিক ও জাগতির জীবনের দেহগত ঘরানার ‘ঝুমুর-টুসু-ভাদু’ শীর্ষক গানের আসর অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে। দুজন শিল্পী প্রায় দেড় ঘন্টা দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন এই ব্যতিক্রমধর্মী বিশেষ সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে।
গতরাতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শিল্পী মনিরা ইসলাম পাপ্পু ও টুম্পা দাশ এই বিশেষ গানের পরিবেশনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এই পরিবেশনার আয়োজন সম্পর্কে বলেন, আমাদের সঙ্গীতের ইতিহাসে ঝুমুর গান সম্পর্কে শ্রোতাদের জানা থাকলেও টুসু ভাদু গান সম্পর্কে তেমন কোন জানা নেই। এই গান বাংলাদেশে খুব কমই হয়েছে। বাংলা গানে এই সব গানের সৃষ্টি বহু পুরনো। বর্তমান প্রজন্মের শ্রোতাদের মাঝে এই গান তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েই একাডেমির পক্ষ থেকে এই আসরের আয়োজন করা হয়।
শিল্পী মনিরা ইসলাম পাপ্পু ও টুসু গান দিয়ে শুরু করেন পরিবেশনা। তিনি প্রথমে লৌকিক ও দেহগত প্রেম নিয়ে দুটি গান পরিবেশন করেন। শিল্পীর কন্ঠে উঠে আসে কল্পনা, দুঃখ, আনন্দ ও সামাজিক জীবনের বেদনার কথামালা। কুমারী মেয়ে ও বিবাহিত নারীদের সাংসারিক সুখ দুঃখকে এই সঙ্গীতের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন তিনি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রাচীন লোকগান হচ্ছে পাপ্পু ও টুসু। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ও বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমা এবং ঝাড়খ- রাজ্যের রাঁচি ও হাজারিবাগ জেলার লৌকিক উৎসবে এই বাংলা গান গাওয়া হয়ে থাকে বলে শিল্পী মনিরা ইসলাম শ্রোতাদের জানান।
শিল্পী টুম্পা দাশ ঝুমুর গান পরিবেশনায় চারটি গান গেয়ে শোনান। গানগুলোতে উঠে আসে মানুষের দু:খ,কষ্ট ও পারিবারিক জীবনের নানা অনুসঙ্গ। ‘ ঝুমুর ’ গান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খ- ও উড়িষ্যা রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রচলিত লোকগীতি বিশেষ। এক সময় ঝুমুর গানগুলি মুখে মুখে রচিত হত এবং কোন ভণিতা বা পদকর্তার উল্লেখ থাকতো না। চৈতন্য পরবর্তী যুগে ভণিতাযুক্ত ঝুমুরের সূচনা হয় বলে অনুষ্ঠানে শিল্পী টুম্পা দাশ জানান।