বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি) : উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে শিক্ষকদের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

585

বাসস প্রধানমন্ত্রী-২ (তৃতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা-শিক্ষক সম্মেলন
উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে শিক্ষকদের সমর্থন চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমাদের ১৫১টা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে ৪৮টা পাবলিক ও ১০৩টা প্রাইভেট। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, যত বড় বড় এলাকা আছে, যেসব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেসব জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। যেখানে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় নাই সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। উদ্দেশ্য একটাই যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা ঘরে বসে যাতে শিক্ষাটা পায়।
তাঁর সরকার কারিগরি ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়ে বসে নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য যা যা করণীয় তার সবকিছুই আমরা করে যাচ্ছি।’
জাতির পিতা শিক্ষাকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন,‘জাতির পিতা শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা করেছিলেন। সংবিধানে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন।’
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারই প্রথম বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায়ে গবেষণার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা শুরু করে। যার সুফলও দ্রুত লাভ করে।
তিনি বলেন, ‘লবণাক্ত ও খরা সহিষ্ণু, জলমগ্ন ধান আবিষ্কার করার ফলেই আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শাক-সবজি উৎপাদন, মাছ উৎপাদন, ফলমূল উৎপাদনে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাতারে ওপরের দিকে রয়েছি।’
’তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আরও বেশি করে গবেষণার তাগিদ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে ঠেকে না থাকে সে কারণে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষায়ও আমরা বৃত্তির ব্যবস্থা করেছি। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। ১ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে প্রাথমিকে বৃত্তি দিচ্ছি। শিক্ষাবৃত্তির টাকা যাতে বেহাত না হতে পারে সে জন্য শিক্ষার্থীর মায়েদের মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠানো হয়। পাহাড়ি ও হাওর অঞ্চলের শিশুদের জন্য টিফিনের ব্যবস্থাও আমরা করেছি।
‘নিজেদের অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জল করেছে’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংকের তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজ এবং দেশের ভাবমূর্তিকে রক্ষা, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক এবং মোবাইল কোম্পানীকে বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সুবিধা দিয়ে প্রতিষ্ঠার সুযোগদানের পরও কেবল এমডি পদ ধরে রাখার ব্যক্তিগত স্বার্থে পদ্মাসেতুর অর্থ প্রত্যাহারে লবিং এর ষড়যন্ত্রের সমালোচনা করেন।
এই প্রত্রিয়ার সাথে যুক্ত দেশের একটি স্বনামধন্য ইংরেজী দৈনিকের সম্পাদকের দেশের স্বার্থবিরোধী অবস্থান এবং নিজ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের তৎকালিন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগের বিভিন্ন ঘটনাও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মাসেতুর কারণে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে অনেক অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তবুও মাথা নত করিনি। কারণ বাবার কাছে শিখেছি অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো কখনও নিজের চিন্তা করতে শিখিনি। আমরা যা শিখেছি বাবার কাছ থেকে শিখেছি। যতটা সেক্রিফাইস করা যায়, কোনো মহৎ অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ক্ষমতাটাকে ভোগের বস্তু মনে করে আর ব্যবসার সুযোগ মনে করে তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারে না। আর নিজের ভাগ্য গড়া যাদের মাথায় থাকে তারা দেশকে কী দেবে?’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছি। ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্লান করে দিয়েছি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এ দেশ এগিয়ে যাবে।
বাসস/এএসজি-এফএন/২১১৫/-আসচৌ