জয়পুরহাটে ফেরোমনফাঁদ ব্যবহারে নিরাপদ সবজি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে

705

জয়পুরহাট, ১৬ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : নিরাপদ ফসল উৎপাদন বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার জেলায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের আরজি জগদিশপুর ও তেরগাতি গ্রামের ৬৫ জন কৃষক তাদের ৪৫ বিঘা জমিতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, নিরাপদ ফসল উৎপাদন এখন সময়ের দাবি। স্থানীয় কৃষি বিভাগের প্রযুক্তিগত পরামর্শে বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ’জাকস ফাউন্ডেশন’ নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা প্রদান করছেন। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা ফসল গুলোর মধ্যে রয়েছে কুমড়া জাতীয় সবজি, করলা, শসা, লাউ, চিচিংগা, কাকরোল, ধুন্দল, মিষ্টি কুমড়া সহ বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি, লতিরাজ কচু ইত্যাদি। ফসলের ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ প্রতিরোধে বিঘা প্রতি ১১ টি ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এতে সফলতা পেয়েছেন বলে জানান, আরজি জগদিশপুর গ্রামের সবজি চাষি সোলায়মান হোসেন।
ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের ফলে বিষমুক্ত ভাবে উৎপাদিত সবজির বাজারে চাহিদাও বেশি বলে জানান তেরগাতি গ্রামের কৃষক রাজু। জয়পুরহাটের উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি করলা, লাউসহ অন্যান্য সবজি রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, কুমিল্লা, ফরিদপুর সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে একদিকে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন আবার বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহার করতে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেরাজুল ইসলাম। সীমান্ত সংলগ্ন আরজি জগদিশপুর ও তেরগাতি গ্রামের ৬৫ কৃষককে ৬২০ পিস ফেরোমন ফাঁদের বয়াম ও লিউর প্রদান করা হয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে ৪৫ বিঘা জমিতে করলা, শসা সহ অন্যান্য সবজি উৎপাদনে ব্যবহার করা হচ্ছে।
নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কৃষির আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তি বিষয়ে কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সবজি মাচা থেকে একটু উঁচুতে তিন শতক জমিতে একটি করে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফল ছিদ্র কারী পুরুষ পোকার মথ ফেরোমন বা গন্ধ ফাঁদে আকৃষ্ট হয়ে বয়ামে ঝুলানো লিউরের নিচে রাখা সাবানের গুড়া মিশ্রিত পানিতে পড়ে মরে যায়। এভাবেই জমিতে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন করা হচ্ছে বিষমুক্ত সবজি।