আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত

340

ঢাকা, ১০ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস): জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি আনিসুজ্জামান বলেছেন, দীর্ঘ ছয় দশকের সাধনায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ আড়াই হাজারের মত পুঁথি সংগ্রহ করেন। তাঁর পুঁথি সংগ্রহের ফলে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনায় গবেষণা কাজে বিপুল সহায়তা পাচ্ছেন গবেষকরা।
তিনি বলেন, তাঁর সংগৃহীত পুঁথির মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম উভয় কবির বিরল সৃষ্টি আমাদের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে। বিশেষভাবে বাংলা সাহিত্যে মুসলিম অবদানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। পরবর্তীকালে যাঁরাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা করেছেন তাঁদের গবেষণায় সাহিত্যবিশারদের সংগৃহীত ও ব্যাখ্যাকৃত পুঁথি বিশেষ সহায়তায় এসেছে।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আজ সকালে বাংলা একাডেমিতে আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের ১৪৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ সব কথা বলেন।
একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। ‘মুসলিম বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস নির্মাণে সাহিত্য বিশারদের ভূমিকা ’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রদান করেন ড. তারিক মনজুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
ড. তারিক মনজুর বলেন, রক্ষণশীল সামাজিক পরিবেশের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তাঁর এক জীবনের শ্রম ও সাধনায় বিপুলসংখ্যক পুঁথি সংগ্রহ করেছেন, পাঠোদ্ধার সম্পন্ন করেছেন। তাঁর আবিষ্কৃত পুঁথিসমূহকে সঙ্গত কারণেই ‘মধ্যযুগের মুসলিম বাংলা সাহিত্যে প্রবেশপথের প্রদীপ’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক উপায়ে পুঁথি সংরক্ষণেও সাহিত্যবিশারদের অবদান অবিস্মরণীয়। সংগ্রহকর্মকে সাহিত্যের বহমান ধারার সঙ্গে যুক্ত করতে তিনি পুঁথির যথাযথ ব্যাখ্যা-ভূমিকা-টীকাভাষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে পুঁথির পরিচিতি নির্মাণ করেছেন। তিনি যেমন ‘ ইসলামাবাদ ’ নামক গ্রন্থের মাধ্যমে আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চায় তাঁর সাফল্যের পরিচয় রেখেছেন তেমনি সাহিত্য সম্পর্কিত প্রবন্ধগুচ্ছ ধারণ করেছে তাঁর স্বতন্ত্র চিন্তাপদ্ধতির ধারাক্রম। গবেষণার জন্য নিজ জীবনে স্বল্পে সন্তুষ্ট থেকেছেন কিন্তু বাংলা সাহিত্যের জন্য রেখে গেছেন তাঁর অমূল্য দান।