নীলফামারীতে শুরু হয়েছে ধান কাটা-মাড়াই

393

নীলফামারী, ৪ মে, ২০১৮ (বাসস) : জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে ধান কাটা-মাড়াই। এখন কর্ম ব্যস্ত কিষাণ-কিষাণিরা। শুক্রবার সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তাদের ব্যস্ততার দৃশ্য।
জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বোরো আবাদের জমিতে পাকা ধান। অনেকেই শুরু করেছেন ধান কাটা-মাড়াই। আবার অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কথা হয় গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলামের (৫৫) সঙ্গে। বোরো আবাদে তিনি এবার আবাদ করেছেন ৫ বিঘা জমিতে। তিনি বলেন,‘ধানে এবারে কোন বির্পযয় নেই। ক্ষেতের ধান পেকে গেছে। দুই এক দিনের মধ্যে কাটা মাড়াই শুরু করবো।’
তিনি জানান, এবারে সেচ এবং সারে কোন সমস্যা ছিল না। প্রকৃতিক কোন দূর্যোগ এবং কোন রোগবালাই ক্ষেতে এ পর্যন্ত আসেনি। তাই ফলন হয়েছে ভালো।
একই গ্রামের অপর কৃষক, ওবায়দুল ইসলাম (৪৫) বলেন,‘আমার ছয় বিঘা জমির মধ্যে ইতিমধ্যে এক বিঘা জমির ধান কাটামাড়াই করেছি। অন্যান্য বারেরর তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে।’
জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের সুটিপাড়া গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক বলেন (৪৫),‘ব্রিধান-২৬ পাকা শুরু হয়েছে। অনেকেই কাটা-মাড়াই শুরু করেছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, জেলার ৬ উপজেলায় এবারে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৪ হাজার ২৭৯ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৮ মেট্রিকটন চাল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরো আবাদ হয়েছে ৮৪ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ডোমার উপজেলায় ১৩ হাজার ৭৩০ হেক্টর, সদর উপজেলায় ২৩হাজার ৯৯৫ হেক্টর, সৈয়দপুরে ৭ হাজার ৭২০ হেক্টর, ডিমলায় ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর, জলঢাকায় ১৪ হাজার ৮৪০ হেক্টর, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১১ হাজার ২০৫ হেক্টর। হাইব্রিড ৪০ হাজার ৯২০ হেক্টর ও উপশি জাত ৪৩ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ২৩ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে ব্রিধান-২৮। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বাম্পার ফলনে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবুল কাশেম আযাদ জানান, ‘কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। কৃষক সচেতন হওয়ায় এবারে বোরো আবাদে রোগ ছড়াতে পারেনি। ব্রিধান-২৮ জাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৭ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে। ওই জাতে প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ মেট্রিকটন চাল। অন্যান্য জাতসহ প্রতি হেক্টরে পাঁচ মেট্রিক টনের ওপরে উৎপাদন হবে।