বাজিস-৯ : গোপালগঞ্জে ১১৯৭টি মন্দিরে চলেছে দুর্গোৎসবের আয়োজন

350

বাজিস-৯
গোপালগঞ্জে-দুর্গোৎসব
গোপালগঞ্জে ১১৯৭টি মন্দিরে চলেছে দুর্গোৎসবের আয়োজন
গোপালগঞ্জ, ৮ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে গোপালগঞ্জে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও মন্ডপ তৈরির আয়োজকেরা। ইতোমধ্যে খড়, মাটি আর দো-মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরী কাজ শেষ হয়েছে। সেই সাথে পূজা মন্ডপ তৈরী থেকে শুরু করে আনুষাঙ্গিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন আয়োজকেরা। এ বছরও গোপালগঞ্জের ১১৯৭টি মন্দিরে চলেছে ব্যাপক প্রস্তুতি ।
জেলার বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, শারদীয়া দুর্গোৎসবে ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি ও আরতীতে মুখরিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে শহর, পাড়া-মহল্লা ও গ্রাম। এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় রেকর্ড ১ হাজার ১৯৭টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি সদর উপজেলায় ৩০৫টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মুকসুদপুর উপজেলায় ২৮৯টি, কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৮০টি, কাশিয়ানী উপজেলায় ২৩৭টি এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৮৬টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৫ই অক্টোবর মহা ষষ্ঠিতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার অনুষ্ঠানিকতা। চলবে আগামী ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। এবছর দেবী দুর্গা ঘোটকে (ঘোড়া) চড়ে পৃথিবীতে আসবেন।
পূজাকে কেন্দ্র করে খড় ও কাঁদা মাটি দিয়ে পরম যতেœ মন্দিরগুলোতে গড়ে উঠছে প্রতিমা। আর এ প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎ শিল্পীরা। প্রতিমাতে পড়ছে ভাস্করের রং তুলির আঁচড়। দেবী মা দুর্গা তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী এবং তার সাথে দেবতা কার্তিক, গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুটিয়ে তুলছেন নিঁপুন হাতের ছোঁয়ায়। যেন মৃৎ শিল্পীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। সেই সাথে চলছে সাজ সজ্জার কাজ। এবছর এক-একজন ভাস্কর ২ থেকে ৪টি করে প্রতিমা তৈরী করেছেন।
এদিকে শারদীয়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্ডপ তৈরী থেকে শুরু করে আনুষাঙ্গিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন আয়োজকেরা। জাঁক-জমকভাবে পূজা আর দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে সড়কগুলোতে তোড়ন নির্মাণ ও আলোক সজ্জা করা হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রেখে এবছরও ব্যাপক আড়ম্বের সাথে পালন হবে দুর্গোৎসব।
মৃৎ শিল্পী রনজিৎ পাল, রবীন্দ্রনাথ পাল জানান, এবছর এক-একজন ভাস্কর ৪ থেকে ৬ টি করে প্রতিমা তৈরি করেছেন। পূজা শুরুর দিন পর্যন্ত রং এর কাজ করতে হবে। তবে বিগত বছরের তুলনায় মজুরি কিছুটা বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির এ বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পান তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টের হয়ে পড়ছে। ফলে পূর্বপুরুষের এই পেশা ছেড়ে যাছেন অনেকেই।
আয়োজক রমেন বিশ্বাস, দুলাল বিশ্বাস, টিটু বৈদ্য, জানান, ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রঙ্গের কাজ। দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে চলছে নানা আয়োজন। তৈরী করা হচ্ছে ষ্টেজ, লাইটিং, তোরণ। সড়কগুলোতে চলছে আলোকসজ্জার কাজ। তবে এবছর প্রতিমা তৈরী, আলোক সজ্জাসহ অন্যান্য সাজ সজ্জায় ব্যয় বাড়ার কারনে এবারের খরচের পরিমান বেশী। তারপরেও জাঁক-জমকভাবে পূজা করার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, গোপালগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্লিক জানান, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে প্রতিটি মন্দিরে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাথে আইন-শৃংখলা রক্ষকারী বাহিনী আগের মত এ বছরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির জেলা গোপালগঞ্জে এবছর নির্বিঘেœ পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান জানান, মন্ডপগুলোতে আনসারের পাশাপাশি পুলিশ থাকবে। এছাড়া পুলিশী নজরদারী বৃদ্ধি করা হবে। মোবাইল টিম নিয়মিত টহল কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। সেই সাথে একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হচ্ছে। কেউ পূজায় বিঘœ ঘটালে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
বাসস/ সংবাদদাতা/১৮৫৫/মরপা