রক্ষণভাগের দিকেই জোর দিচ্ছেন জেমি ডে

425

সিলেট, ৩ অক্টোবর, ২০১৮ (বাসস) : বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শুক্রবার ফিফা র‌্যাংকিংয়ে অনেক দূর এগিয়ে থাকা ফিলিপাইনের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ। ফিফার র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ১৯৩তম এবং ফিলিপাইন ১১৪তম অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা।
লাওসের বিপক্ষে প্রথম ওই ম্যাচে খুব একটা কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি বাংলাদেশের রক্ষন ভাগকে। ফলে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাও নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পাননি। তবে ফিলিপাইনের শক্তিশালী আক্রমন ভাগের সামনে আসন্ন ম্যাচে গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। এক দিনের বিশ্রামে কাটিয়ে সেই পরীক্ষার জন্য তৈরী হচ্ছে বাংলাদেশ।
সিলেট বিকেএসপির মাঠে আজ দলীয় অনুশীলনে গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেছেন কোচ জেমি ডে। ডিফেন্ডার তপু বর্মনও জানালেন ফিলিপাইন ম্যাচে নিজেদের সামলে রেখে খেলার কৌশল রপ্ত করছেন তারা। লাওস ম্যাচে সে অর্থে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে। ৩৬তম মিনিটে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিপক্ষের একমাত্র জাজালো আক্রমণে সামলেছিলেন তিনি।
ফিলিপাইন ম্যাচে কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি তাই বাড়তি মনোযোগী রানা। তিনি বলেন,‘শুরুতে আমাদের লক্ষ্য ছিল ক্লিন শিট নিয়ে ফিরব। ৯০ মিনিটের মধ্যে সুযোগ আসবে এবং সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগাব। প্রথম ম্যাচে আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। তবে গত ম্যাচে আমার দুই-তিনটা ছোট ছোট ভুল হয়েছে। কোচের সঙ্গে এটা নিয়ে কথা হয়েছে। আমি নিজেও ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। মূলত সেইগুলো নিয়ে আজ কাজ করেছি’।
দলের অনেক কিছু গোলরক্ষকের ওপর নির্ভর করে। আমাদের ফুটবলের প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি, গোলরক্ষক এবং ডিফেন্ডাররা যদি ভালো করে, তাহলে দলও ভালো কিছু পেতে পারে। এই ডিফেন্ডারদের সঙ্গে কোরিয়াতে আটটা ম্যাচ খেলেছি। এই দলে ওয়ালী ভাই এসেছেন। তিনি অভিজ্ঞ। তো সব মিলিয়ে বর্তমান রক্ষনভাগ ভালো অবস্থানেই রয়েছে।’
গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে বলের ফ্লাইট মিস করে দলকে ডুবিয়েছিলেন গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। যে কারণে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের দলে জায়গা হয়নি তার। পোস্টের নিচে ফেরা রানা জানালেন শহীদুলের মত ভুল করতে চান না, খেলতে চান নির্ভার থেকে। বলেন,‘শুরু থেকে আমার ওপর কোনো চাপ ছিল না এবং আমি চাপ নেইনা। আমি চ্যালেঞ্জ বা চাপ কোনোটাই নিতে চাই না। আসলে সাফে সোহেল যেটা করেছিল, সেটাও খেলার অংশ। নেহায়েত একটা ভুল। তাছাড়া আর কিছু না। তবে আমি সেই ভুলটা করতে চাই না। অনেকের ধারণা সেমিফাইনাল নিশ্চিত হলে ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে ম্যাচটির তেমন গুরুত্ব থাকবে না। তবে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা কোনো ম্যাচকেই হালকাভাবে নেয়ার পক্ষে নন, ‘আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হলেও ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। দেশের মাটিতে খেলা। দর্শকরা মাঠে এসে খেলা দেখছে। তারা চাইবে বাংলাদেশের জয় দেখতে। আমাদের কাজ হবে ভাল একটা ফুটবল ম্যাচ উপহার দেয়া।’ লাওস ম্যাচে তপু বর্মন, ওয়ালী, বিশ্বনাথ, টুটুল হোসেন বাদশাকে নিয়ে গড়া রক্ষণভাগ প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের সামলেছেন ভালোভাবেই। ফিলিপাইনের ফরোয়ার্ডদের আটকানো কঠিন হবে জেনে তপু বলেন, লাওসের বিপক্ষে ছোটখাট ভুল করেছি। ফিলিপাইন ম্যাচে প্রথমে আমাদের লক্ষ্য ঝুঁকিমুক্ত ফুটবল খেলা। গত ম্যাচে ছোট-খাট ভুল ছিল, সেগুলো নিয়ে কাজ হয়েছে। ডিফেন্সের একটাই কাজ হবে আমরা কোনো ঝুঁকি নিব না। মাঝ দিয়ে আমরা আর কোনো পাস যেতে দিব না। সব মিলিয়ে গোলরক্ষক ও আমাদের মধ্যে ভালো একটা সমন্বয় থাকবে।’
সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে দুই গোল করা তপু জানালেন রক্ষণ সামলে সুযোগ পেলে কাজে লাগাতে চান তিনি। এই ডিফেন্ডার বলেন,‘প্রথমত আমার কথা, আমি ডিফেন্স করব। গোলপোস্ট আগলে রাখব। এরপর সেট পিসে যাব। যদি গোল করতে পারি তাহলে সেটা দলের জন্যে ভালো। আমার জন্যও ভালো’।