জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসনে আসেপ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক : স্পিকার

351

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসনে এশিয়া-ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টারি পার্টনারশিপ মিটিং (আসেপ) সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
তিনি বলেন, এশিয়া ও ইউরোপের পার্লামেন্ট সদস্যগণ সংসদীয় কূটনীতি চর্চার মাধ্যমে জলবায়ু পরিার্তনের ঝুঁকি নিরসনে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পেয়েছে এ সম্মেলনের মাধ্যমে। জনগণের ইতিবাচক পরিবর্তন ও জীবন রক্ষার জন্য সকল সংসদ সদস্যগণকে অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাসে সোচ্চার হতে হবে।
আজ ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দশম এশিয়া-ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টারি পার্টনারশিপ মিটিং (আসেপ-১০)-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে কো-চেয়ার হিসেবে বক্তৃতাকালে স্পিকার এসব কথা বলেন। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
এর আগে তিনি ‘এশিয়া এন্ড ইউরোপ ফেসিং ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ এন্ড ইনক্রিজিং এনভায়রনমেন্টাল চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক সেশনে কিনোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
স্পিকার বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতিকে উন্নত ও স্থিতিশীল রাখার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবগুলোকে বিবেচনায় রেখে নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য-শস্য, প্রাণি ও মৎস্য সম্পদ খাতগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এছাড়া বন্যা, সাইক্লোন ও অতিরিক্ত লবনাক্ততা ভূমিকে অনুর্বর করছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাঁধা সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষা ২০০৯ অনুযায়ী, ১৯৮৮ সালের বন্যায় সমগ্র দেশের প্রায় ৬০ ভাগ ভূমি প্লাবিত হয়। যেখানে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন সমপরিমাণ ক্ষতি সাধিত হয় এবং ৪৫ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. শিরীন বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি সূচক ২০১৮ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। ১৯৯৭-২০১৬ এই বিশ বছরে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে জিডিপিতেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, প্রতিকার হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিবেচনা করে ডেল্টা প্ল্যান গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দারিদ্র্য বিমোচনের বিকল্প নেই, আর এক্ষেত্রে যেহেতু জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ সম্পর্কযুক্ত সেহেতু বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ৮ দশমিক ৮ জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং নিজস্ব অর্থায়নে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন।
‘এশিয়া এন্ড ইউরোপ ফেসিং ক্লাইমেন্ট চেঞ্জ এন্ড ইনক্রিজিং এনভায়রনমেন্টাল চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক সেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পী এমপি বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে আরও অংশ নেন ইমরান আহমদ এমপি।
সমাপনী অনুষ্ঠানে এশিয়ান পার্লামেন্টারী এসেম্বলি-এর চেয়ারম্যান টরনারিটিস নিকোস, রাশিয়ান ফেডারেশেনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স-এর ডেপুটি চেয়ারম্যান আন্দ্রে ক্লিমভ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট হেইদি হাওতালা উপস্থিত ছিলেন।