ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে সুবিধা পাচ্ছে বরগুনার গ্রামাঞ্চলের মানুষ

474

বরগুনা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস): বরগুনার মতো সাগরপাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোর গোড়ায় নানা আধুনিক প্রযুক্তি পৌঁছে যাওয়াতে তাদের দিনযাপনে এখন ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি হাতের নাগালে আসায় উপকূলের মানুষের সনাতনি ধ্যান-ধারনাতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। মানুষ চেষ্টা করছে আধুনিক বিশ্বকে জানবার, সেই সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়ার। আর এই পরিবর্তনের অনেকখানিই অংশীদার ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র বা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলো।
গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন, কম্পিউটার কম্পোজ ও প্রিন্ট, ছবি তোলা ও ছবি প্রিন্ট, সার্টিফিকেট ও ছবিসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট লেমিনেটিং করা, ফটোকপি করা, পাসপোর্ট ফরম পূরণ করা, ই-মেইল, ইন্টারনেট, ভিডিও কলিং, চাকরির তথ্য প্রাপ্তি ও আবেদন করা, স্কুল-কলেজে ভর্তি, ইত্যাদি সেবাগুলো দিচ্ছে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র। এ সেবা নেওয়ার জন্য এখন আর উপজেলা পর্যায়ে বা শহরে যেতে হয় না। বাড়ির কাছেই সেবাগুলো পেয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ খুশি।
জেলার ৬টি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার বা ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে তথ্য সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করেও সেবা পাওয়া যায়। বাড়তি টাকা খরচ করতে হয় না গ্রামের সাধারণ মানুষদেরকে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইউআইএসসি’র ‘সরকার-উদ্যোক্তা-জনগণ’ প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়ের কমপক্ষে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও কম্পিউটার কাজে অভিজ্ঞ নারী ও পুরুষকে তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নির্বাচন করা হয়। দায়িত্ব দেয়া হয় তথ্য কেন্দ্রর।
ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির আধুনিক সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রা হয়েছে সহজ, আনন্দময় ও গতিশীল। জানিয়েছেন, চাওড়া ইউনিয়নের তরুন উদ্যোক্তা সোনিয়া খানম।
আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের কাছে স্বল্প সময়ে কম খরচে দ্রুত তথ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার এবং অনলাইন সুবিধা প্রদান করে সারা দুনিয়ার অবারিত জ্ঞান ভান্ডারের সাথে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সংযোগ ঘটানোই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য। তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে জাতীয় উন্নয়নের মূল ¯্রােতধারায় সংযুক্ত করার অভিপ্রায়ে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অনস্বীকার্য।
চাওড়া ইউনিয়নের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, তথ্যসেবা সুবিধা পাওয়ার জন্য টাকা এবং সময় অপচয় করে উপজেলা শহরে আসতে হতো। বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার তথ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার কারণে ঘরে বসেই সেই সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আমতলীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সরোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সেবা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল সেন্টারে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বেকার যুবসমাজ দক্ষতা অর্জন করছে এবং বিভিন্ন আয় বৃদ্ধির কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন।
বরগুনার জেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বা তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে সাধারণ মানুষের সাথে বিশ্বব্যাপী ভার্চুয়াল সম্পর্ক পাকাপোক্ত হয়েছে। তথ্যের জন্য সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়ে না। তথ্যকেন্দ্রগুলো গ্রামীণ মানুষের ধ্যান-ধারনাই আমূল পাল্টে দিয়েছে।