ভোলায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

487

ভোলা, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমের আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এবছর ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা’র বিপরীতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৫ হেক্টর জমি। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০ হেক্টর, স্থানীয় জাত ৪০ হাজার ৬৯৫ হেক্টর ও হাইব্রীড ৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। নির্ধারিত জমি থেকে মোট ৪ লাখ ২২ হাজার৮৬৪ মে. টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এছাড়া গত বছর চাল উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ১০০ মে:টন।
খামার বাড়ি সূত্র জানায়, নির্ধারিত জমিতে আমন চাষের জন্য ১৫ হাজার ২১৯ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে উফশী’র বীজতলা ৮ হাজার ৫৯০ ও স্থানীয় বীজতলা ৬ হাজার ৬২৯ হেক্টর জমি। আর মোট আমন আবাদের জমির মধ্যে সদর উপজেলায় ২৫ হাজার ৫৪০ হেক্টর, দৌলতখানে ১৬ হাজার ৫৪৫, ১৮ হাজার হেক্টর হয়েছে বোরহানউদ্দিনে, তজুমুদ্দিনে ১২ হাজার ৮৫০, ২৩ হাজার ৫০০ লালমোহনে, চরফ্যসনে ৭০ হাজার ৩৩০ ও মনপুরায় ১২ হাজার ৩১০ হেক্টর জমি রয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার বাসস’কে বলেন, জেলায় প্রকৃতিগত ভাবেই একটু দেড়িতে আমনের চাষ করা হয়। জুলাই’র শেষ দিকে আমনের চারা রোপন কার্যক্রম শুরু হয়ে আগষ্ট’র শেষ পর্যন্ত চলে। আর ডিসেম্বর’র মাঝামাঝি সময় থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ফসল ঘরে তুলবে কৃষকরা। আর জেলায় মোট ৫০০ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসাথে আমনের পুরো জমিটাতেই পার্চিং ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। ফলে পোকা-মাকরের আক্রমন এবছর অনেকটাই কম।
সদর উপজেলার দক্ষিন দিঘলদী ইউনিয়নের বাঘমারা এলাকার কৃষক ঝিলন চৌকিদার, সেলিম মাতাব্বর ও হারুন হওলাদার বলেন, ভোলায় প্রতিবছরই আমন ধানের আবাদ ভালো হয়। তাই তারা প্রত্যেকে ২ একর করে জমিতে আমনের চারা রোপন করছেন। ইতোমধ্যে চারা রোপন সম্পন্ন হয়ে বর্তমানে ধান গাছ কুশি স্তরে রয়েছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সব ধরনের পরামর্শমূলক সেবা দিচ্ছেন বলেও জানান তারা।
কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, জেলায় আমনের মধ্যে সাধারণত বিআর-১১, ২২, ২৩, ব্রীধান-৩০, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৪, ৪৬, ৫১, ৫২, ব্রী ধান ৭, ৬২ চাষ করা হয়। স্থানীয় জাতের মধ্যে রাজা সাইল, কাজল সাইল, মধুমালতি, কালাগোড়া, কালিজিরা ইত্যাদীর চাষ বেশি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এছাড়া বীজতলা তৈরি, পরিমিত সার প্রয়োগ, রোগ-বালাই দমনে কীটনাশক ব্যবহার, সারিবদ্ধভাবে চারা রোপনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কৃষকদের পরামর্শমূলক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে জানান তিনি।