আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয়ের কোন বিকল্প নেই : নাসিম

823

ঢাকা, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিজয়ের কোন বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে জনগন তাদের রায় দেবে। বিএনপি-জামায়াতকে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।’
নাসিম আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতকে মাঠে ময়দানে প্রতিহত করা হবে। যে কোন মূল্যে তাদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের এক মতবিনিময় সভা শেষে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি এবং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি।
পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)’র মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি এডভোকেট ইউসূফ হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ(আইইবি)’র সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও ঢাকা সাংবাদিক ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী।
এ সময় বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ পোস্টের সম্পাদক শরীফ সাহাবুদ্দিনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে সে সমাবেশে পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও বক্তব্য রাখবেন। তিনি বলেন, এ মাস থেকে দেশের জেলা ও উপজেলায় ১৪ দলের উদ্যোগে যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে সে সমাবেশে বিএনপি-জামায়াত ও যুক্তফ্রন্টের নেতাদের মুখোশ উম্মোচন করা হবে।
সভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের সময় আমরা মাঠে নামতে পারি নি। তারপরও মাঠ ছাড়িনি। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত গত দশ বছরে আন্দোলন করতে পারেনি। কারণ তারা কি নিয়ে আন্দোলন করবে সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নয়।
ড. কামাল হোসেন ও ব্যরিস্টার মইনুল হোসেনের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ড. কামাল হোসেন বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় আমাদের সঙ্গে থাকলেও সেনা সমর্থিত তত্তাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর তাদের সঙ্গে চলে যান এবং অনির্ধারিত সময় যে ওই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে তার সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ওই সরকারের উপদেষ্টা থাকার সময় টেলিভিশনের টকশোতে আমরা কোন কথা বলতে পারতাম না। আদালতে ও টেলিভিশনে একজন করে সেনা কর্মকতা বসিয়ে রাখা হতো।
হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেয়া ও না নেয়ার ওপর ১৪ দলের ঐক্য নির্ভর করছে না। যতদিন পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নির্মূল না হবে ততদিন পর্যন্ত্র এ ঐক্য থাকবে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু, সংস্কৃতিকর্মী ও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আগামী ডিসেম্বর মাসের মহাপরীক্ষার নির্বাচনে বিজয়ী হতে হবে।
শাজাহান খান বলেন, যুক্তফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের ঐক্য জাতির জন্য হুমকি। কারণ আদর্শ ছাড়া কোন ঐক্য হতে পারে না। এ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে। তিনি বলেন, আগামী অক্টোবরের পর বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনকে বানচাল করতে নাশকতার যে ষড়যন্ত্র করেছে তা প্রতিহত করার জন্য পাল্টা পরিকল্পনা থাকতে হবে এবং সে অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে নিয়ে কখনো ইনক্লুসিভ নির্বাচন হতে পারে না। কারণ জাতীয় ঐক্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধীদের কখনো ঐক্য হতে পারে না।
গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০১ সালের মত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর যাতে কোন হামলা হতে না পারে সেজন্য সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে বিশেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতার কোন বিকল্প নেই।