বাসস ক্রীড়া-১ : বিদেশী আগ্রহে গর্বিত স্প্যানিশ ফুটবল : লা লীগা

210

বাসস ক্রীড়া-১
ফুটবল-স্পেন-লা লীগা
বিদেশী আগ্রহে গর্বিত স্প্যানিশ ফুটবল : লা লীগা
মাদ্রিদ, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : মাদ্রিদে লা লীগার সদর দপ্তারের দেয়ালে অনুপ্রেরণামূলক বাণী হিসেবে স্প্যানিশ ভাষায় লেখা আছে, ‘এলমন্ডো এস নুয়েস্ট্রো ক্যাম্পো ডি জুয়েগো’ অর্থাৎ ‘গোটা বিশ্ব আমাদের খেলার মাঠ’।
দেশটির জাতীয় এই খেলার সঙ্গে এ উক্তিটি উপযুক্ত উপাদান বলেই মনে হয়। লা লীগার আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক পরিচালক অস্কার ময়ো এএফপিকে বলেন, ‘আমরা যদি প্রতিযোগিতামূলক এই খেলা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে নিজেদের গোটা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।’
তবে অন্যরা এখনো এ বিষয়টির ওপর পুরোপুরো আস্থাশীল নয়। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ) শুক্রবার লা লীগাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী জানুয়ারিতে জিরোনা ও বার্সেলোনার মধ্যে লীগ ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে আয়োজনের বিষয়কে তারা সমর্থন করে না। বিদেশের মাটিতে অংশগ্রহণের বিষয়ে লা লীগার ওই অনুরোধে ক্লাব দুটি সাড়া নিয়েছে, তবে দলের শীর্ষ তারকাদের সেখানে অংশগ্রহণের বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এদিকে, আরএফইএফ তাদের চিন্তার পরিবর্তন ঘটালেও পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন নিতে হবে ইউএস সকার ফেডারেশনের। সেই সঙ্গে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যথাক্রমে উয়েফা ও কঙ্কাকাফ-এর। একই সঙ্গে অনুমোদন পেতে হবে স্প্যানিশ স্পোর্টস কাউন্সিলের।
বার্সেলোনার কর্তা আর্নেস্টো ভালভার্দে ওই ম্যাচের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, ‘এটি আমাদের লক্ষ্য। তবে এ জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।’ তারপরও এ বিষয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জুলেন লোপেতেগুই’র মধ্যেও।
তবে এতে দমে যেতে নারাজ লা লীগা। ময়ো বলেন, দুটি লাল দাগ রয়েছে, যেগুলো কোনভাবেই অতিক্রম করা যাবে না, ‘এক মৌসুমে একটির বেশী ম্যাচ সেখানে আয়োজন করা হবে না। সেটি ক্লাসিকোও নয়।’
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় খেলাধুলার সম্প্রসারণে তাদের সঙ্গে ১৫ বছরের জন্য চুক্তি রয়েছে লা লীগার। অনেকেই মনে করছেন, এই মৌসুমেই যদি এই উদ্যোগটি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে সেটি স্থগিত করতে হবে। বাতিল করা যাবে না। ময়ো বলেন, ‘এটি খেলা শুরুর সময় পরিবর্তনের মতো। তবে আপনি যদি কোন একটি সূচি নির্ধারণ করার পর সেটি পরিবর্তন করেন, তাহলে এর মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়াটা কঠিন হয়ে যাবে। তবে আমরা এটিও জানি, অচিরেই আমরা এটি করবো। সময় গেলেও এ ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। ’
লা লীগার এই পরিচালক বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রিমিয়ার লীগকে টেক্কা দেয়া। এ জন্য চলতি গ্রীষ্মে আমরা দুটি নতুন ভালো চুক্তি সম্পাদন করেছি- যা নতুন গল্প রচনায় সহায়ক হবে।’
স্প্যানিশ সম্প্রচার কেন্দ্রের সঙ্গে ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক টেলিভিশন সত্ব থেকে লা লীগা বছরে সংগ্রহ করবে কমপক্ষে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউরো। সেই সঙ্গে বাড়তি ৮৯৬ মিলিয়ন ইউরো আয় হবে বৈদেশিক সম্প্রচার থেকে।
তবে এই অংকটিও ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের চেয়ে কম। তারা আশা করছে বছরে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউরো আয়ের। এবং সেটি একই সময়ে শুধুমাত্র তাদের জাতীয় বাজার থেকে। লা লীগার ক্ষেত্রে ওই পার্থক্য কমাতে হবে বহির্বিশ্ব থেকে। ময়ো আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা অন্তত তাদের সমান পর্যায়ে যেতে চাই।’
লা লীগা বিশ্বাস করে, বিদেশে এর আগ্রহ কোনভাবেই হুমকি নয়, বরং একটি সুযোগ। ময়ো বলেন, স্প্যানিশ ফুটবল বিশ্ব সেরার আসনে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ক্লাবের সভাপতি, কোচ, দর্শক, এবং খেলোয়াড় সবাই এর অনুষঙ্গ। এটিকেই গোটা বিশ্ব অনুসরণ করে। যা আমাদের গর্বিত করে। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, বছরে অন্তত একটি ম্যাচ আয়োজনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ আমাদের বাজারের জন্য গর্ব করার মতো। তাই আমাদের অবশ্যই খুব সাবধানতার সঙ্গে এ বিষয়ে এগুতে হবে। তবে প্রথম বছরে এটি খুব একটা সহজ হবে না। তবে আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি এবং গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছি, যাতে এটি সফল করে তোলা যায়।’
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/০৯৩০/-স্বব