বাজিস-৭ : লক্ষ্মীপুরে ১শ’ ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪টি অত্যাধুনিক সাইক্লোন সেল্টারের নির্মাণ কাজ চলছে

121

বাজিস-৭
লক্ষ্মীপুর-সেল্টার
লক্ষ্মীপুরে ১শ’ ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪টি অত্যাধুনিক সাইক্লোন সেল্টারের নির্মাণ কাজ চলছে
লক্ষ্মীপুর, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : জেলার মেঘনার পাড়ের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য সরকার ১’শ ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪ টি অত্যাধুনিক সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ । বিশ্ব ব্যাংকে’র অর্থায়নে নির্মিত ‘বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্প’ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর বাস্তবায়নে এসব স্কুল কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ দ্রত্ এগিয়ে যাচ্ছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলোর নিচতলা ফাঁকা রেখে তৃতীয় তলা পর্যন্ত করা হবে। দুর্যোগকালীন সময়ে ৩৪টি কেন্দ্রে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের ধারণ ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম রশিদ আহম্মদ বাসস’কে বলেন, উপকুলীয় অঞ্চল লক্ষ্মীপুর জেলা হওয়াতে এখানে সাইক্লোন সেল্টার প্রয়োজন। দুর্যোগের সময় এসব আশ্রয় কেন্দ্রই হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল। প্রতিটি কেন্দ্র বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি সাইক্লোন সেল্টারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা করে। এছাড়াও জেলায় একই প্রকল্পের আওতায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো ৩০ টি সাইক্লোন সেল্টার সংস্কার কাজ দ্্রত এগিয়ে চলছে। এসব সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্যোগের আতংক অনেটাই কমে আসবে বলে মনে করেন এলজিইডি’র এই কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, অত্যাধুনিক ডিজাইনের এসব সাইক্লোন সেল্টারে সংযোগ সড়ক, গভীর নলকূপের মাধ্যমে সুপ্রিয় পানির ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, বিদ্যুতের, সোলার প্যানেল, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা ৬টি টয়লেটের ব্যবস্থা, সরাসরি অসুস্থ রোগীকে র‌্যামের মাধ্যমে দোতালায় উঠানো এবং গর্ভবতী মায়ের জন্য ডেলিভারি মেটেল্স ব্যবস্থা রয়েছে। গবাদি পশু যেমন গরু-ছাগলও মহিষ রাখাসহ সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এসব সাইক্লোন সেল্টারে জলোচ্ছ্বাসের সময় পানি সহজে সরে যাওয়ার জন্য নিচতলা ফাঁকা রাখা হয়েছে। আর দুই তলা ও তিন তলায় অন্যান্য সময় যখন ঘূর্ণিঝড় থাকবে না তখন স্কুল হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া দুর্যোগের সময় এখানে গবাদি পশু, প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস-পত্রসহ অবস্থান করতে পারবে মানুষ। সরকারের নতুন নতুন এসব আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনে দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরিতে সহায়তা করবে।
জেলার মোট ৩৪ টি সাইক্লোন সেল্টারের মধ্যে সদর উপজেলায় নির্মাণ হচ্ছে ৭ টি। এর মধ্যে ভবানীগঞ্জে ইউনিয়নে দক্ষিণ পূর্ব ভবানীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ হচ্ছে। আর এ খবরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় জনসাধারণ। তারা বলছেন, এখানকার মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুযোগের সাথে যুদ্ধ করতে হয়। সাইক্লোন সেল্টার হলো ঝড়ের সময় অন্যতম নিরাপদ স্থান। তাই এখানে নতুন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ সরকারের একটি সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
ভবানীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বাসস’কে বলেন, এ এলাকায় একটি সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ স্থানীয়দের প্রাণের দাবি ছিলো। শেখ হাসিনার সরকার উপকূলের জনগণের দাবি পূরণ করায় এলাকাবাসী আনন্দিত। বিগত দিনে এখানে কোন আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। বিশেষ করে বর্ষার সময় স্কুলের নিচের অংশ পানিতে ডুবে থাকত। তাই এখন সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ হলে স্থানীয়রা দুরবস্থার হাত থেকে রক্ষা পাবে ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুবিধা হবে।
জেলা রেডক্রিসেন্ট’র সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, নদীর তীরবর্তী এলাকায় সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি ছিলো। এ অঞ্চলের মানুষকে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করতে হয়। সাইক্লোন সেল্টার হলো ঝড়ের সময় তাদের নিরাপত্তার প্রধান স্থান। আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ আওয়ামী লীগ সরকারের যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।
বাসস/সংবাদদাতা/১৫৫৭/মরপা