নাগরিক সচেতনতায় পাহাড়ে কমছে ম্যালেরিয়া

340

বান্দরবান, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ (বাসস) : সাধারণ নাগরিকদের মাঝে মশা ও ম্যালেরিয়া সম্পর্কে অধিকতর চেতনাবোধ সৃষ্টি হওয়ায় পার্বত্য তিন জেলায় ক্রমেই কমে আসছে ম্যালেরিয়াজনিত ম্যতুরহার এবং আক্রান্তের সংখ্যাও। কয়েকবছর আগেও পার্বত্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে ম্যালেরিয়ায় প্রতিবছর প্রাণহারাতেন গড়ে ৪০০ লোক। এখন এরোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসার পাশাপাশি মৃত্যুরহারও নিম্নস্তরে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা.অংশৈ প্রু মারমা। তিনি জানান, জেলায় গতবছর কীটনাশকযুক্ত ৩লাখ মশারী বিতরণ করা হয়েছে সরকারি ব্যবস্থাপনায়। চলতিবছর মার্চ পর্যন্ত একই ধরনের ১০ হাজার মশারী বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সুত্র জানায়, জেলার ৭টি উপজেলায় ২০১৪ সালে প্রাণঘাতি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় ২৪ হাজার লোক এবং মারা যায় ১২জন রোগী। ২০১৫ সালে এরোগে আক্রান্ত হয় ১৮ হাজার এবং মারা যায় মাত্র ৩জন রোগী। ২০১৬ সালে এরোগে আক্রান্ত হয় ১৪ হাজার এবং মারা যায় মাত্র ২জন। ২০১৭ সালে এরোগে আক্রান্ত হয় ৫হাজার ২৭৩জন এবং মারা যায় মাত্র ১জন লোক। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত কোন লোক এরোগে মারা যায়নি বলেও স্ত্রু নিশ্চিত করেছে। তবে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা গতবছরের চেয়ে চলতিবছর বাড়তে পারে বলে শংকা প্রকাশ করেছেন নাইক্ষংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কারণ মিয়ানমারের ম্যালেরিয়া জীবানুবাহী রোহিংগাদের বসতি রয়েছে সীমানাঘেঁষেই।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডা. মংহ্লা প্রু মারমা বলেন, বর্ষায় সীমান্ত এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হওয়া, পার্বত্যাঞ্চলে মশারউপদ্রুব বেশি থাকা এবং দুর্গমতার কারণে যথাসময়ে ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় পার্বত্য বান্দরবান জেলাকে এখনও ম্যালেরিয়ামুক্ত করা যায়নি। তবে জেলার দুর্গম এলাকার মানুষও এখন সচেতন ম্যালেরিয়ার ব্যাপারে। মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদেরও নিয়মিত যাতায়াত ঘটছে গ্রাম-পাড়ায়। রাতে মশারী ব্যবহার করাসহ ওষুধও ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে উঠেছে গ্রামীণ মানুষের মধ্যে।
রুমা উপজেলার দুর্গম রনিন পাড়ার যুবক রুয়ালখুপ বম বলেন, তাদের গ্রামে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রন্ত থাকতেন তিনবছর আগেও,কিন্তু এখন কোন লোক ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়না। তারা সচেতন এবং মশারী ব্যবহারে ঝুঁকছেন।
থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া অং মারমা এবং তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান মংপ্রু মারমা বলেন, দুর্গম এলাকা থেকে ম্যালেলিয়ার প্রকোপ কমছে এবং রোগ ক্রমেই বিদায় নিচ্ছে। সতেন হচ্ছেন মানুষ।