অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নেয়ার জন্য জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের প্রতি আহবান তথ্যমন্ত্রীর

452

ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জঙ্গি-রাজাকার রক্ষা, অপরাধীদের হালাল করা ও অস্বাভাবিক সরকার আনার চক্রান্ত এবং বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান এবং দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখার জন্য জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী আজ তার মন্ত্রনালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এ আহবান জানিয়ে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র ও ‘যুক্তফ্রন্ট’-এর সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা বলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি, নির্বাচনে সাংবিধানিক অনিশ্চয়তা তৈরি, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির প্রস্তাব বা দাবি নাকচ করেন।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট সাংবাদিক সম্মেলন করে তাদের পাঁচ দফা দাবি ও ৯টি লক্ষ্য উত্থাপন করেছেন। তাদের ৫ দফা দাবি বিষয়ে সরকারের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য এ সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয় ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক সমঝোতার নামে বিএনপি-জামাত-জঙ্গিসন্ত্রাসী আগুন সন্ত্রাসীদের হালাল করার প্রস্তাব নাচক করছি। ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ ও ‘যুক্তফ্রন্ট’ এর নামে রাজনীতির মাঠে বর্তমানে সক্রিয় প্রবীণ রাজনীতিকদের প্রতি ‘খালেদা-তারেক-বিএনপি-জামাত বাঁচাও’ ও ‘অসাংবিধানিক সরকার আনো’ এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ত্যাগ করার আহ্বান জানাই।
হাসানুল হক ইনু বলেন, তারা তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশকে জঙ্গিবাদের বিপদ-আপদ-ঝুঁকি থেকে মুক্ত করার জন্য কাজ করবেন এবং গত ১০ বছরে যারা বাংলাদেশ বিরোধী পাকিস্তাান পন্থার রাজনীতির মাঠে প্রভাব বিস্তার করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবেন এবং দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামাত-২০ দলীয় জোটের মতই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা দাবি দেখে এটা সুস্পষ্ট যে, তারা সাংবিধানিক সংকট ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনতে চাইছেন।
‘নির্বাচনকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সিভিল প্রশাসনের সহযোগী হিসাবে সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করার সুনির্দিষ্ট আইন থাকার পরও তারা বিএনপি-জামাত-২০ দলীয় জোটের মতই ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার দাবির প্রতিধ্বনি করেছেন মাত্র’ বলেন ইনু।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি এবং এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার না করার’ দাবি করে তারা আইন-আদালত-বিচার সব কিছু বন্ধ করে রাখার আব্দার করেছেন। এ ধরনের কোনো দাবি কোনো গণতান্ত্রিক সমাজ কখনো দেখেনি।
এছাড়াও ‘সব রাজনৈতিক দল’ শব্দের আড়ালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মামলা, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ দন্ডিত, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা-জঙ্গি সন্ত্রাস-আগুন সন্ত্রাসের মামলায় অভিযোগে আটক বা দন্ডিতদেরও মুক্তি চাওয়ার নামান্তর বলেন তিনি।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ও যুক্তফ্রন্টের ৫ দফা দাবি ও তাদের রাজনৈতিক অবস্থান হুবহু বিএনপি-জামাত-২০ দলের দাবি ও অবস্থানের ফটো কপি মাত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব কিছু দেখে এটা জলের মত পরিস্কার যে, বিএনপি-জামাত-২০ দলের মতই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্ট মাঠে নেমেছে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধ করা, আগুনসন্ত্রাসের বিচার বন্ধ করা, দুর্নীতির বিচার করা, সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে অস্বাভাবিক সরকার আনা, জঙ্গি সন্ত্রাস ও তাদের মূল পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামাতকে রাজনৈতিকভাবে হালাল ও রক্ষা করার জন্যই। তাদের আসল উদ্দেশ্য নির্বাচন নয়।
জাতিসংঘের কাছে বিএনপি’র অভিযোগের বিষয় সর্ম্পকিত এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অভিযোগটি অসত্য। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কিন্তু উন্মুক্ত আদালতে দীর্ঘ দশ বছর বিচার চলেছে। খালেদা জিয়া সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন। রায়ে তার সাজা হয়েছে।