গোপালগঞ্জে সাড়ে ১২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেল লাইন উদ্বোধনের অপেক্ষায়

2239

গোপালগঞ্জ, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ (বাসস) : গোপালগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ৪৪ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের পালা। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের যে কোন দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ রেল লাইনের উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। তবে কবে নাগাদ এই লাইনে রেল চলাচল শুরু হবে এই প্রতীক্ষায় উন্মুখ হয়ে বসে আছে গোপালগঞ্জের মানুষ।
দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলা গোপালগঞ্জে রেল লাইন হবে, আর রেলে চড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা যাবে এ যেন জেলাবাসীর কল্পনারও অতীত ছিল। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। এই উন্নয়নের জন্য গোপালগঞ্জবাসী প্রধানমন্ত্রীকে শুধু ধন্যবাদ নয় দোয়া ও আর্শিবাদ করেছেন।
নিম্নাঞ্চল হিসাবে খ্যাত গোপালগঞ্জ জেলা সদরে রেল লাইন নির্মাণ হওয়ায় গোপালগঞ্জবাসী খুবই আনন্দিত। তারা এখন স্বল্প খরচে এবং নিরাপদ ভ্রমণ করতে পারবেন, যেতে পারবেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। সেই সাথে সুযোগ হবে ব্যবসা বাণিজ্যেরও। গোপালগঞ্জের উৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করাও সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম দিকে এই রেল লাইনের কাজ শুরু হয়। দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও তমা গ্রুপ বিগত ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে কাজ শুরু করেন। ইতোমধ্যে তারা তাদের নির্মাণ শেষ করেছেন। এখন শুধুমাত্র কোথাও কোন ত্রুটি রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছেন। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর বয়রা পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার রেল লাইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপের প্রজেক্ট ম্যানেজার এসএম নজরুল ও ম্যাক্স গ্রুপের প্রকৌশলী এখলাসুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ প্রকল্পের জন্য সর্বমোট ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রকল্পের লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ মূহূর্তে ডেকোরেশনের কাজ। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর বয়রা পর্যন্ত মোট ৪৪ কিলোমিটার রেল লাইন, মধুমতি নদীর উপর একটি রেল সেতু, ৪৩ টি কার্লভাট, এবং ৬টি রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর সাথে স্টেশনে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সংযোগ সড়কও নির্মাণ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কারারগাতি গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক পবিত্র বিশ্বাস বলেন, রেল লাইনটি একালার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যপক ভূমিকা পালন করবে। গোপালগঞ্জে বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রচুর পরিমাণে সবজি ও কৃষিপণ্য উৎপান হয় থাকে। পরিবহনের অভাবে স্থানীয় বাজারে কম মূল্যে তাদের বিক্রি করতে হয়। এখন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল শুধু এলাকায় নয় রেলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে কম খরচে পরিবহন করতে পারবেন। সেই সাথে এ জেলার মানুষ নিরাপদেদেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে পারবে। এই কারণে সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানাই। শুধু পবিত্র বিশ্বাসই নয় এমন কথা বলেছেন, রঘুনাথপুর গ্রামের শলিল বিশ্বাস, স্বপন বিশ্বাস, বেদগ্রামের নীতিশ রায়, রাজিব আহম্মেদ রাজু, সাইফুল ইসলাম,মোল্লা রনি হোসেন কালু, নিউটন মোল্লা, শহরের সাইফুল্লাহ রাজু, নাজমুল ইসলাম, অসীম রায়সহ অনেকে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য রেল লাইন, পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এর ফলে এ এলাকা অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধশালী হবে। দেশবাসী কম খরচে জাতির জনকের সমাধিতে আসতে পারবেন। গোপালগঞ্জের মানুষও দেশের বিভিন্ন স্থানে কম খরচে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, গোপালগঞ্জবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।